ডিমলায় বুড়ি তিস্তা নদীর বাঁধ ভেঙে ১০ গ্রাম প্লাবিত
***********************************************************************
ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার বুড়ি তিস্তা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার। ডুবে গেছে আমনের বীজতলা।

স্থানীয় লোকজন জানান, ভোরে উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের সুন্দরখাতা গ্রামে বুড়ি তিস্তা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাঁধের প্রায় ২০০ মিটার অংশ ভেঙে যায়। বাঁধটির ভাঙা অংশ দিয়ে সুন্দরখাতা, মধ্য সুন্দরখাতা, রূপাহারা, সিংপাড়া, মাইঝালির ডাঙাসহ প্রায় ১০টি গ্রামে বুড়ি তিস্তা নদীর পানি প্রবেশ করে। এতে পানিতে তলিয়ে যায় এসব গ্রামের বেশ কিছু জমির আমন ধানের বীজতলা।

সুন্দরখাতা গ্রামের বাসিন্দা মো. হাবিবুর রহমান (৫০) জানান, ষাটের দশকে বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। এত দিন বাঁধটি মজবুত থাকার কথা নয়। এর আগেও বাঁধটি ভেঙে প্রায় ২০ বছর অনাবাদী ছিল এসব গ্রামের প্রায় এক হাজার একর জমি। অথচ টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের। তিনি আরও বলেন ‘এবার বাঁধ ভেঙে গ্রামের অন্তত ৫০ জন কৃষকের আমন ধানের বীজতলা তলিয়ে গেছে।’

একই গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মজিদ বলেন, ‘ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢল নেমে আসায় বাঁধটি ভেঙে গেছে। ভেঙে যাওয়া জায়গাটি দিয়ে প্রবল বেগে গ্রামে পানি ঢুকছে। বাড়িঘরে পানি উঠে যাওয়ায় আমরা আমাদের কাপড়চোপড় ও ঘরে থাকা মালামাল খাটের ওপর রেখেছি।’

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সেকেন্দার আলী বলেন, ‘বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ওই এলাকার অন্তত এক হাজার বিঘা আবাদি জমি সাময়িক পতিত হয়ে পড়বে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হবে।’

এ বিষয়ে নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাঁধ ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বাঁধটি অনেক পুরোনো, ৪০ থেকে ৪৫ বছর আগের। এটি আমাদের আওতায় কি না, এ বিষয়ে সন্দেহ আছে। এখন পানি না কমা পর্যন্ত সেখানে মালামাল নিয়ে কাজ করা সম্ভব নয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলে বাঁধ সংস্কারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আতিকুর রহমান আরও বলেন, ‘বাঁধের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। এতে বাঁধটি বিধ্বস্ত হয়ে প্রায় ৩০০ একর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব জমিতে এখন তেমন কোনো ফসল নেই। কিছু জমিতে আমন ধানের বীজতলা রয়েছে।’

source : প্রথম আলো

image