করলা
করলা খেতে ভীষণ তিতা অথচ পুষ্টিগুণে ভরপুর। ইংরেজিতে এ জন্য তরকারিটির নাম বিটার মেলন। সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, অপছন্দনীয় এই সবজিটিই দূর করতে পারে ক্যান্সার, ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ। বাংলাদেশের বারডেম হাসপাতালের গবেষণায়ও ইতিপূর্বে ডায়াবেটিস রোগে করলার ভূমিকার কথা বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন। এ ছাড়া করলা দূর করে নানা ধরনের মারাত্মক সব শারীরিক সমস্যা। যদিও এর তেতো স্বাদের কারণে কারও মুখে রোচে না, কিন্তু শুধু স্বাদের কথা ভেবে স্বাস্থ্যে উপকারিতা ও মিঠাগুণের কথা একেবারে ভুলে বসলেও হবে না।
দ্য নেভাডা সেন্টার অব অল্টারনেটিভ অ্যান্ড অ্যান্টি এইজিং মেডিসিনের বিশেষজ্ঞ ড. ফ্রাঙ্ক শ্যালেনবার্গার ও তার সহযোগীরা গবেষণায় দেখতে পেয়েছেন, করলা ক্যান্সারের কোষ বৃদ্ধির প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তিনি তার নতুন গবেষণায় দেখতে পান, করলার রস পানিতে মাত্র ৫ শতাংশ মিশ্রিত হয়, যা প্রমাণ করে এটি অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে কাজ করে।
করলার প্রায় ৯০-৯৮ শতাংশ পর্যন্ত ক্যান্সারের কোষ ধ্বংসের ক্ষমতা রয়েছে। দ্য ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডোর একটি গবেষণায় দেখা যায়, করলা অগ্ন্যাশয়ের টিউমার প্রায় ৬৪ শতাংশ কমিয়ে আনতে সক্ষম। এ ছাড়া ড. শ্যালেনবার্গার তার গবেষণায় দেখতে পান, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা, অ্যাজমা, ত্বকের ইনফেকশন, ডায়াবেটিস এবং পাকস্থলীর নানা সমস্যা প্রতিরোধ করতে পারে শুধু এই একটি সবজি 'করলা'। খুব কম ক্যালরিসমৃদ্ধ করলায় রয়েছে পটাশিয়াম, বেটাক্যারোটিন, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাংগানিজ, হাই ডায়াটেরি ফাইবার, ভিটামিন বি১, বি২, বি৩ ও সি, ফোলায়েট, জিঙ্ক এবং ফসফরাস।
তেতো স্বাদের কারণে অনেকেই করলা খেতে পছন্দ করেন না। আবার অনেকে তেতো বলেই এটি বেশি করে খান। তবে পছন্দ বা অপছন্দ— যাই হোক না কেন, করলা খেলে শরীরে নানা প্রভাব পড়ে। যেমন-
১. যারা রোজ করলা খান, তাদের ডায়াবেটিসের আশঙ্কা কমে। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
২. নিয়মিত করলা খেলে পেটের অনেক সমস্যা কমে যায়। অ্যাসিডিটির সমস্যা থাকলে উপকার মিল মিলবে। এই সবজি পেট পরিষ্কার করে এবং খিদেও বাড়িয়ে দেয়।
৩. নিয়মিত করলা খেলে কৃমির সমস্যা কমে যায়।
৪. করলা রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়িয়ে দেয়। ফলে নিয়মিত এটি খেলে জ্বর, অন্যান্য সংক্রমণের আশঙ্কা কমে।
৫.করলা শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে দেয় ও রক্ত পরিস্কার করে।
#linkeei #bittermelon #vegetable