চুল পড়া থামাতে চান? রসায়নের জাদু লুকিয়ে আছে পেঁয়াজের রসে—প্রকৃতি আর বিজ্ঞানের মিশ্রনে আছে চুল গজানোর এক অনন্য রহস্য! 🧅💇
চলুন এ সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেই, লেখা আর ছবি যদি আপনাদের পছন্দ হয় তাহলে রসায়ন এর সাথে থাকবেন 🙏।
পেঁয়াজের রস দিয়ে চুল গজায়—এটা অনেকের কাছে কেবল ঘরোয়া উপায় মনে হলেও এর পেছনে রয়েছে রসায়নের সুন্দর ব্যাখ্যা। আমাদের চুল মূলত কেরাটিন নামের একটি প্রোটিন দিয়ে তৈরি। কেরাটিনকে শক্ত ও সুস্থ রাখতে সালফার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। পেঁয়াজে রয়েছে প্রচুর সালফার যৌগ, যেমন অ্যালিসিন, ডাইঅ্যালাইল ডিসালফাইড ইত্যাদি, যা নতুন কেরাটিন তৈরি করতে সাহায্য করে এবং চুলকে মজবুত করে।
এছাড়াও পেঁয়াজে রয়েছে কুয়ারসেটিনসহ বিভিন্ন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এগুলো আমাদের মাথার ত্বকে জমে থাকা ফ্রি র্যাডিক্যাল বা Reactive Oxygen Species (ROS) কে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। ফ্রি র্যাডিক্যাল চুলের ফলিকলকে দুর্বল করে, ফলে চুল পড়তে শুরু করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কারণে ফলিকল আবার সক্রিয় হতে পারে এবং চুল গজানোর সম্ভাবনা বাড়ে।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, পেঁয়াজের রসে থাকা সালফার যৌগ catalase এনজাইম সক্রিয় করে। এই catalase মাথার ত্বকে জমে থাকা হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড (H₂O₂) ভেঙে দেয়। গবেষণায় দেখা গেছে, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড জমে থাকলে চুল অকালে সাদা হয়ে যায় এবং ফলিকল দুর্বল হয়। তাই পেঁয়াজের রস এভাবে চুলকে সাদা হওয়া থেকে কিছুটা রক্ষা করতে পারে।
শুধু তাই নয়, পেঁয়াজের রসের অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল বৈশিষ্ট্য মাথার ত্বককে ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাসের আক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়। এতে খুশকি ও অন্যান্য সংক্রমণ কমে, যা পরোক্ষভাবে চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
তবে মনে রাখতে হবে, পেঁয়াজের রস সবার ক্ষেত্রে সমানভাবে কাজ নাও করতে পারে। কারো ক্ষেত্রে ভালো ফল পাওয়া যায়, আবার কারো ক্ষেত্রে তেমন পরিবর্তন দেখা নাও যেতে পারে। তবুও রসায়নের দিক থেকে ব্যাখ্যা করলে বোঝা যায়, পেঁয়াজের রসে এমন উপাদান রয়েছে, যা চুলের জন্য উপকারী হতে পারে।