মৃত্যু ও কবরের চিন্তা করার ফায়েদা

এরকম আরো কোরআন-হাদিস অনুযায়ি পোস্ট পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। theislamiccommunication.xyz

কবর ও পরকালের চিন্তা করার ফায়েদা

এই পৃথিবী একসময় শূন্য ছিল বরং এই পৃথিবীর কোনো অস্তিত্বই ছিল না, এই পৃথিবীতে কোন মানুষই ছিল না। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন এই পৃথিবীতে সর্বপ্রথম মানুষ হিসেবে হযরত আদম আলাইহিস সালাম কে সৃষ্টি করেন। অতঃপর হযরত আদম আলাইহিস সালামের বামপাশের হাড্ডি দিয়ে হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম কে সৃষ্টি করেছেন ।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবীতে মানুষ সৃষ্টি করার ইচ্ছা করলে, ফেরেশতারা তখন বলেছিল আপনি পৃথিবীতে মানব জাতি সৃষ্টি করবেন, যারা পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে, রক্তপাত করবে, খুনখারাপি করবে। আমরা কি আপনার এবাদত করার জন্য যথেষ্ট নই ? তখন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ফেরেশতাদেরকে বলেছিল আমি যা জানি তোমরা তা জানো না।

হযরত আদম আলাইহিস সালামকে যখন পৃথিবীতে প্রেরণ করা হয়েছিল, তখন তাকে বলা হয়েছিল যে, তুমি অনন্ত কাল পৃথিবীতে থাকতে পারবেনা তুমি পৃথিবীতে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য থাকবে। অতঃপর তুমি আবার আমার কাছে ফিরে আসবে। অতএব আমরা স্পষ্টভাবে বুঝতে পারলাম যে, আমাদেরকে কোন একদিন এই পৃথিবী ছাড়তে হবে কারণ আমরা আদম আলাইহিস সালাম এরই সন্তান। 

অতএব আমাদের বুঝা উচিত আল্লাহ রব্বুল আলামীন ফেরেশতাদের কথা না রেখে কেন আমাদেরকে দুনিয়ায় পাঠালেন কি কারনে আমাদেরকে সৃষ্টি করলেন। মানব জাতিকে এই পৃথিবীতে সৃষ্টি করার কারণ একটাই, যে তারা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের এবাদত-বন্দেগি করবে এবং তার হুকুম অনুযায়ী চলবে। আল্লাপাক কোরআনের মধ্যে বলেন :   ما خلقت الجن والانس الا ليعبدون

অর্থ : আমি মানব জাতি এবং জ্বিন জাতিকে সৃষ্টি করেছি একমাত্র আমার এবাদত করার জন্য।

এ পৃথিবীতে যখন আমরা জন্মগ্রহণ করেছি অবশ্যই একদিন আমাদেরকে মৃত্যুবরণ করতে হবে। তাই আমাদের ভাবা উচিত আমরা কি নিয়ে মৃত্যুবরণ করবো।

এই পৃথিবীটা একটা বাজারের মত। যেমনিভাবে বাজার থেকে চাল, ডাল, তৈল আমাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র-খাদ্যদ্রব্য ক্রয় না করে বাড়ি ফিরলে আমাদের অনাহারে থাকতে হয়। ঠিক তেমনি এই দুনিয়ার বাজার থেকে আমরা এবাদত বন্দেগীর মত পণ্য-আসবাবপত্র ক্রয় না করে আখেরাতের দিকে পা বাড়ালে, আমাদের আরাম-আয়েশ তো দূরের কথা বরং কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে। তাই আমাদের জন্য করণীয় হচ্ছে সময় থাকতেই আমরা যেন আল্লাহর ইবাদতে লিপ্ত থেকে আখেরাতের পণ্য সঞ্চয় করতে পারি। 

আল্লামা শেখ সাঈদী (রহ) বলেন :

  اگر مردہ مسکیں زباں داشتے       «»      بفریاد و زاری فغاں داشتے 

کہ اے زندہ چوں ہستت امکان گفت   «»    لب از ذکر چوں مردہ بر ہم مخفت

যদি কবরে শায়িত ব্যক্তিদের কথা বলার শক্তি থাকতো, তাহলে তারা ফরিয়াদ ও চিৎকারের সাথে বলতো । হে দুনিয়ার মানুষ তোমাদের তো এখনো কথা বলার শক্তি আছে, অতএব তোমরা আল্লাহর যিকির থেকে তোমাদের জিব্বা কে মৃতদের মত ঘুমন্ত অবস্থায় রেখো না। 

বেশি বেশি মৃত্যুকে স্মরণ করার ফায়দা

হযরত আবু হুরায়রা রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন : 

(اكثروا ذكر هاذم اللذات)  তোমরা বেশি বেশি মৃত্যুকে স্বরণ করো, কারণ হচ্ছে, মৃত্যুর স্বরণ দুনিয়ার স্বাদ-স্বপ্ন ধ্বংস করে দেয়। 

আমাদের সবারই কোনো-না-কোনো স্বপ্ন রয়েছে। কিন্তু সবার স্বপ্ন এক না। অনেকের স্বপ্ন হচ্ছে পৃথিবী কে নিয়ে। আমি বাড়ি করবো, গাড়ি কিনবো, ডাক্তার হব, ইঞ্জিনিয়ার হব আরো কত কত স্বপ্ন। আবার অনেকের স্বপ্ন হচ্ছে দুনিয়াতে কোন রকম খেয়েদেয়ে আল্লাহর ইবাদতে মশগুল থেকে আখেরাতে আল্লাহর দিদার ও জান্নাত লাভ করা।

এবার আপনি নিজেই বেছে নিবেন কোন স্বপ্নটি আপনি দেখবেন বা দেখা উচিত। নিশ্চয়ই জ্ঞানী ব্যক্তিরা এই ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীর স্বপ্ন দেখে না বরং তারা চিরস্থায়ী আখেরাতের কথা ভেবে তারা আল্লাহর ইবাদতে লিপ্ত থাকে। পৃথিবীর স্বপ্ন দেখা কোন ভুল নয়। কিন্তু আমাদের পৃথিবীর স্বপ্ন দেখতে দেখতে এবাদত করার  সময় পার হয়ে যায়, তারপর আমাদের খালি হাতেই কবরে যেতে হয়।

There is nothing wrong with dreaming of this world, but do not dream if you are harmed in the Hereafter

তাই আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশি বেশি মৃত্যুকে স্মরণ করার জন্য বলেছেন, যাতে করে আমাদের দুনিয়াতে বড় বড় স্বপ্ন ধ্বংস হয়ে যায় এবং আমরা আখেরাতের কাজে লিপ্ত হতে পারি।

  আরও পড়ুন:-

            দুনিয়া থেকে অনাগ্রহ

            কেমন হবে জান্নাত? কারা হবে                          জান্নতবাসি?

            আল্লাহর পথে জিহাদকারীদের                           মর্যাদা

            বিসমিল্লাহর অলৌকিক গুন,                               বিসমিল্লাহর বরকত

এতক্ষণ সাথে থাকার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।  আর ইসলামিক মাসআলা-মাসায়েল সম্পর্কে জানতে আমাদের এই সাইটের সাথেই থাকুন এবং আপনি যেকোনো ধরনের প্রশ্ন  কমেন্ট বক্সের মাধ্যমে করতে পারবেন। যথাসাধ্য তার উত্তর দেয়া হবে।

 


Md Shorirul Islam

5 Blog posts

Comments