মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে যা করণীয়

যে কোন ধরনের সড়কে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন মোটরসাইকেল। এ কারণে চালকদের নিরাপত্তার ব্যাপারে অধিক সতর্ক থ

যে কোন ধরনের সড়কে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ যানবাহন মোটরসাইকেল। এ কারণে চালকদের নিরাপত্তার ব্যাপারে অধিক সতর্ক থাকতে হয়। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমানোর জন্য পূর্ব সতর্কতার কোন বিকল্প নেই। ছোটখাটো বাধাও অনেক ক্ষেত্রে ভয়ানক বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ সামান্য অসতর্কতা থেকে গুরুতর আহত এমনকী মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। মোটরসাইকেল চালানোর সময় যেসব সতর্কতা মেনে চলা জরুরি-

১. শুধু মোটর বাইক নয়; যে কোন গাড়িই বাঁক পার হবার সময় হর্ন বাজিয়ে যায়। এ সময় শুধু হর্নই নয়, গতিও কমিয়ে আনা উচিত। কারণ মোটরসাইকেলের মত ছোট গাড়িগুলো প্রায়ই অন্যান্য বড় গাড়ি চালকদের চোখ এড়িয়ে যায়।

২. সিগন্যালে বা রাস্তার পাশে থামার সময় স্বাভাবিকভাবেই মোটরসাইকেল চালকদের গতি কমাতে হয়। এ সময়টা সতর্কভাবে লুকিং গ্লাসে পেছনে কোন গাড়ি আসছে কিনা তা দেখে নেয়া উচিত। নিজের প্রয়োজনে বা কোন সমস্যার কারণে থামতে হলে পিছনে দ্রুত বেগে কোন গাড়ি আসছে কিনা তা দেখে নেয়া উচিত। বাইক পুরো না থামিয়ে গিয়ারে রাখা যেতে পারে। এতে সবেগে কোন গাড়ি কাছে এসে আঘাত করবে বলে মনে হলে দ্রুত বাইক দূরে সরিয়ে নেয়া যাবে।

৩.বেশিরভাগ গাড়ি চালক রাস্তায় চলার সময় মোটরসাইকেল খেয়াল করে না। মোটরসাইকেল অন্য গাড়ির তুলনায় আকারে ছোট। তাই মোটর বাইক চালকদেরকেই নিজেদের অবস্থানের জানান দিতে হবে। এক্ষেত্রে উজ্জ্বল বর্ণের পোশাক পরিধান করা যেতে পারে। বিশেষ করে রাতে বাইকের লাইটগুলো জ্বালিয়ে রাখতে হবে এবং অন্ধকারে স্পষ্ট চোখে পড়ে এমন রঙের পোশাক পড়তে হবে।

৪. মোড় ঘুরার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন মোটর বাইক চালক অন্যান্য গাড়ি চালকদের ব্লাইন্ড স্পটে পড়ে না যান। এজন্য মোড় ঘোরার ক্ষেত্রে প্রতি দুই গাড়ির মাঝে যথেষ্ট দূরত্ব রাখতে হবে এবং গতি অবশ্যই অনেক নিচে নামিয়ে আনতে হবে।

৫. মহাসড়কগুলোতে দুর্ঘটনার প্রধান কারণ হলো গাড়িচালকদের ওভারটেকিং প্রবণতা।  বড় রাস্তাগুলোতে গতি একদম কমিয়ে আনারও উপায় থাকে না। কারণ সেখানে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে পেছনের সবেগে চলমান গাড়িটির সাথে ধাক্কা লেগে যেতে পারে। তাই এক্ষেত্রে নিজের জন্য রাস্তার যে কোন একটি পাশ ঠিক করে একটি নির্দিষ্ট বেগে গাড়ি চালানো যেতে পারে। নিজে ওভারটেক না করে বরং লুকিং গ্লাসে দেখে পেছনের গাড়ির অবস্থা বুঝে তাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়াই ভালো।

৬. ইউ টার্ন নেয়ার সময় দুই দিকে খেয়াল রাখতে হয়। এক অপর রাস্তার উল্টো পাশ থেকে কোন গাড়ি কত দ্রুত আসছে। আর দুই মোটর বাইকের সাথে আরো কোন গাড়ি ইউ টার্ন নিচ্ছে কিনা এগুলোর ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। তবে প্রাথমিক ভাবে উল্টো পাশের গাড়ি থেকে যতটুকু দূরত্ব বজার রাখা যায় ততই ভালো। আর সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো বাইকের গতি অনেক কমিয়ে আনা। আইল্যান্ডের সাথে বাইক লেগে যাচ্ছে কিনা সেদিকেও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

৭. মোটরসাইকেলটির নিরবচ্ছিন্ন চলমান অবস্থা বজায় রাখতে এর যন্ত্রাংশ ঠিক রাখা মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। এর জন্য নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের তালিকায় ইঞ্জিন, ব্রেক, টায়ার, হেডল্যাম্প, টার্ন সিগনাল, এবং জ্বালানি রাখতে হবে।

৮. মোটরসাইকেল চালানোর সময় কখনই মোবাইল ফোনে কথা বলা ঠিক নয়। দু’হাতকে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে ব্যবহার করতে হবে মোটর বাইক চালানোর কাজে। এমনকি ব্লুটুথ দিয়েও ফোনে কথা বলা উচিত নয়। খুব জরুরি হলে ধীর গতিতে রাস্তার একেবারে ফুটপাত সংলগ্ন জায়গায় বাইক থামিয়ে তারপর ফোন ধরা যেতে পারে।

৯. ঝড়, বৃষ্টির মত প্রতিকূল আবহাওয়ায় মোটরসাইকেল চালানো ঠিক নয়। মোটরসাইকেল চালানোর আদর্শ রাস্তা হলো শুষ্ক রাস্তা। ভেজা রাস্তায় টায়ারের ঘর্ষণ ক্ষমতা কম থাকে।  তবে খুব প্রয়োজন হলে গাড়ি চালানোর সময় অতিরিক্ত সাবধান থাকতে হবে। ।

১০. মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঝুঁকি হ্রাস করার জন্য সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো  অল্প গতিতে মোটরসাইকেল চালানো। মোটরসাইকেলের সব দুর্ঘটনার পেছনে মুলত এই দ্রুত গতিই দায়ী।


Linkeei Official

192 Blog posts

Comments