আমার কুরআন মজিদ
আমার কুরআন মজিদ

আমার কুরআন মজিদ

4 Members

শায়খুল ইসলাম আল্লামা তাকী উসমানী (হাফিযাহুল্লাহ)।
হযরত সত্যিকারের মহব্বত আর দরদ দিয়ে ‘ইনশাদ’ করেছেন।
প্রথম বয়েস আর শেষবয়েসে গাওয়া হামত/নাতগুলো সাধারণত দিলকাশ হয়। প্রথম বয়েসে থাকে নিষ্পাপ গলা। শেষবয়েসে থাকে আল্লাহর তাকওয়ামাখা ভীতকম্পিত গলা।
.
রাব্বে কারীম হযরতকে হায়াতে তাইয়িবাহ তবীলাহ সহীহা দান করুন। আমাদেরও। আমীন।

আল্লাহর মহব্বত!
------
১: আল্লাহর মহব্বত।
আল্লাহর প্রতি মহব্বত রাখা আকীদায়ে তাওহীদের সবচেয়ে বড় দাবি। আল্লাহর মহব্বত তাওহীদের অপরিহার্য অংশ। মৌলিক উপাদান। অনস্বীকার্য মূলনীতি। আল্লাহর প্রতি মহব্বত রাখা কলবের সবচেয়ে বড় ফরজ দায়িত্ব। আল্লাহর মহব্বতের মাধ্যমে বান্দা ঈমানের মিষ্টতা অনুভব করতে পারে। আমল সংশোধন করতে পারে। আল্লাহর মহব্বত উত্তম জীবনের মূলভিত। সুখ-সৌভাগ্যের উৎস। হৃদয়-নয়নজুড়ানিয়া। আল্লাহর মহব্বতহীন ব্যক্তি জীবন্মৃত।
.
২. আল্লাহর মহব্বত।
আল্লাহর মহব্বত মানে কী? আমার যাবতীয় সম্মান-সমীহ, গুরুত্ব-মর্যাদা, তোয়াজ-তাজীম, বিনয়-নম্রতা, আনুগত্য-দাসত্ব, আবেদন-নিবেদন, আত্মসমর্পণ-আত্মনিবেদন একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্ধারণ করার নামই ‘আল্লাহর মহব্বত’। এই মহব্বতই তাওহীদের হাকীকত। রাব্বুল আলামীনের প্রকৃত উবূদিয়্যত-দাসত্ব। আল্লাহর প্রকৃত বান্দা কখনো রাব্বে কারীমের মহব্বতে আর কাউকে শরীক করে না। আল্লাহর প্রতি বিশুদ্ধ মহব্বতই প্রকৃত দ্বীন। আল্লাহর মহব্বতে মুখলিস বান্দাই দ্বীনের প্রকৃত অনুসারী। আল্লাহর মহব্বতে আর কাউকে শরীক করার নামই ‘শিরক’। আল্লাহর প্রতি মহব্বতে অন্য কাউকে শরীককারী ব্যক্তিই ‘মুশরিক’।
.
৩. আল্লাহর মহব্বত।
আল্লাহর মহব্বত প্রতিটি বান্দার কলবে সুপ্ত আছে। কলবের মৌলিক উপাদানের মধ্যেই আল্লাহর মহব্বত নিহিত আছে। আল্লাহর অস্তিত্বে অবিশ্বাস বা নাস্তিকতা মানবমনের সুস্থ্য আচরণ নয়, বিকৃতি। আল্লাহর যথাযথ পরিচয় জানা না থাকলে সমস্যা দেখা দেয়। বান্দা আল্লাহর আসমায়ে হুসনা, আল্লাহর স্বয়ংসম্পূর্ণ ‘সিফাত’ সম্পর্কে যত বেশি জানবে, বান্দার তাকওয়া-পরহেযগারির পরিমাণও তত বৃদ্ধি পেতে থাকবে। আল্লাহর প্রতি মহব্বতও উত্তরোত্তর বাড়তে থাকবে।
আল্লাহকে যতবেশি চিনবে, বান্দার কলবে ততবেশি ‘উবূদিয়্যতের’ উত্তম বৃক্ষ ফলন্ত হতে থাকবে। আল্লাহর মারিফাতসিক্ত কলব থেকে ইবাদতের ফল উদ্গম হতে থাকবে। সমস্ত অনুগ্রহ আর কৃত্বিত্ব একমাত্র আল্লাহরই জন্য, একমাত্র আল্লাহরই পক্ষ হতে, একমাত্র আল্লাহরই জন্য। আলহামদুলিল্লাহ।

ইখলাস!
---
১: ইখলাস
ইখলাস মানে একনিষ্ঠতা। আল্লাহর জন্যই সবকিছু করা। ইখলাস দ্বীনের মূলভিত। ইখলাস দ্বীনের প্রকৃত হাকীকত ও প্রাণশক্তি। ঈমানের সংজ্ঞাভুক্ত কলবী আমলের গুরুত্বপূর্ণতম অংশ হল ‘ইখলাস’। মর্যাদা গুরুত্ব ও প্রভাবে দুনিয়া ও আখেরাতের সবচেয়ে প্রভাবশালী আমল। দোয়া করতে গেলে ইখলাস আবশ্যক। ইখলাসবিহীন কুরআন ও সুন্নাহর অনুসরণ আল্লাহর দরবারে গৃহীত হবে না। ইখলাসহীন ইবাদত জাহান্নাম থেকে মুক্তির উসীলা হতে পারবে না।
.
২. ইখলাস
ইখলাস অর্জন করতে হলে, প্রথমে নিজেকে চিনতে হবে। নাফস সম্পর্কে জানতে হবে। প্রবৃত্তির ঝোঁক-আসক্তি সম্পর্কে পরিপূর্ণ ওয়াকিবহাল থাকতে হবে। তারপর জানতে হবে,
ক. কোনও জিনিস নয় তাঁর অনুরূপ (لَیۡسَ كَمِثۡلِهِۦ شَیۡءࣱۖ) শুরা ১১।
খ. দৃষ্টিসমূহ তাঁকে ধরতে পারে না (لا تُدْرِكُهُ الأَبصارُ)। আন‘আম ১০৩।
গ. অসম্ভব নয় (দয়াময়ের পুত্র আছে, একথা বলা)-র কারণে আকাশ ফেটে যাবে, ভূমি বিদীর্ণ হবে এবং পাহাড় ভেঙে-চুরে পড়বে-মারয়াম ৯০।
تكادُ السمواتُ يتفطَّرنَ منه وتنشقُ الأَرضُ وتخِرُّ الجبالُ هدّاً
এ-বিষয়গুলো ভাল করে আত্মস্থ করে নিলে, আল্লাহর বড়ত্ব বোঝা সহজ হবে। আল্লাহর প্রতি আমার আনুগত্যে নিষ্ঠা সৃষ্টি হবে। ইবাদত-বন্দেগীতে বিশুদ্ধ ইখলাস ফয়দা হবে।
ইয়া আল্লাহ, আমাদের পরিপূর্ণ ইখলাস দান করুন। আমাদের তাওফীক দান করুন। যাবতীয় বিচ্যুতি থেকে রক্ষা করুন। ভাল কাজে দ্রুত ধাবিত হওয়ার জ¦লন্ত উৎসাহ দান করুন। আমীন।
.