কুড়িগ্রামে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, প্রধান আসামিসহ দুজন গ্রেপ্তার
***********************************************************************
কুড়িগ্রামের চর রাজীবপুর উপজেলায় এক গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে থানায় মামলা করেছে পরিবার। মামলায় প্রধান আসামি মো. জয়নাল আবেদীন (৪৮) ও আরেক আসামি মো. আলম হোসেনকে (৪০) আজ শনিবার দুপুরে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গতকাল শুক্রবার রাতে ভুক্তভোগী নারীর মামা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে রাজীবপুর থানায় মামলাটি করেন। এতে জয়নাল আবেদীন, মো. আলম হোসেন, শুক্কুর আলী (৫০) ও মো. সোলেমানকে (২৯) আসামি করা হয়।

রাজীবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মামলার ১২ ঘণ্টার মধ্যে দুই আসামিকে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যের নাম মামলার এজাহারে নেই। গ্রেপ্তার আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ সদস্যদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাঁদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

এর আগে ধার নেওয়া ২০ হাজার টাকা সময়মতো পরিশোধ করতে না পারায় ওই গৃহবধূকে দুই মাস ধরে দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ করে তাঁর পরিবার। এ ঘটনায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের কাছে অভিযোগ করে বিচার না পেয়ে গত ২৪ মে ভুক্তভোগী গৃহবধূ ও তাঁর স্বামী বিষ পান করেন। কুড়িগ্রামের চর রাজীবপুর ও জামালপুর জেলার দুটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ঘুরে পাঁচ দিন পর ২৯ মে বুধবার ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়। তবে তাঁর স্বামী বেঁচে যান। ওই দম্পতির তিন বছরের একটি শিশুসন্তান রয়েছে।

ভুক্তভোগী নারীর স্বামী অভিযোগ করেন, দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় স্ত্রীকে নিয়ে মামলা করতে থানায় যাওয়ার পথে থানার ফটক থেকে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি বলেন, বিষপানের এক দিন আগে ২৩ মে বৃহস্পতিবার মামলা করতে থানায় যাওয়ার সময় অভিযুক্ত জয়নালের সহযোগী পুলিশ কনস্টেবল রবিউল ইসলাম থানার ফটকেই তাঁদের আটকে দেন এবং মীমাংসার দায়িত্ব নিয়ে বাড়িতে ফেরত পাঠান। যদিও এই ঘটনার মীমাংসা আর হয়নি। শেষে অভিমানে এই দম্পতি বিষ পান করেন।

কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, স্বামী-স্ত্রীর বিষপানের ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা এবং ধর্ষণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আরেকটি মামলা হয়েছে। মামলার ১২ ঘন্টার মধ্যে পুলিশ প্রধান আসামীসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। পুলিশ এখন ধর্ষণ মামলার আসামিদের নিয়ে কাজ করছে। তাঁদের আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তাঁদের স্বীকারোক্তি পেলে ও পুলিশি তদন্তে এই মামলার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকবে সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।

source : প্রথম আলো।

image