বিতর্কে বাইডেন পিছিয়ে পড়ায় উদ্বেগে পশ্চিমা মিত্ররা
***********************************************************************
যুক্তরাষ্ট্রে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে অনুষ্ঠিত সরাসরি প্রথম বিতর্কে বিপর্যয়ের পর জো বাইডেনকে নিয়ে হতাশ তাঁর দল ডেমোক্রেটিক পার্টি। বিতর্কে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে মোটেও ভালো করতে পারেননি তিনি। বাইডেনের এ ব্যর্থতাকে উদ্বেগজনক হিসেবে দেখছে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র বিভিন্ন দেশ, এমনকি পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোও।
গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টা শহরে সিএনএনের স্টুডিওতে অনুষ্ঠিত ওই বিতর্কে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে একপ্রকার কোণঠাসা করে ফেলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এর পর থেকে ৮১ বছর বয়সী বাইডেন নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্পকে সামলাতে পারবেন কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে। এমনকি নির্বাচনের প্রার্থিতা থেকে বাইডেনকে সরে দাঁড়ানোর কথাও তুলছেন ডেমোক্রেটিক পার্টির অনেকে।
নির্বাচন থেকে বাইডেনকে সরানো নিয়েই মূলত ভয় পাচ্ছে ন্যাটোসহ ওয়াশিংটনের পশ্চিমা মিত্ররা। যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় নীতিবিষয়ক সিএনএনের সম্পাদক লুক ম্যাকগির মতে, কূটনীতিকদের ভয়, শেষ সময়ে এসে প্রার্থী পরিবর্তন করা হলে পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়া সংকটের মধ্যে পড়তে পারে। এতে রাশিয়া ও চীনের মতো শত্রুরা মার্কিন গণতন্ত্রে হস্তক্ষেপের সুযোগ করে নিতে পারে।
লুক ম্যাকগি বলেন, এমনটা হলে শত্রু দেশগুলোর তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রকে দুর্বল দেখাবে। এ দুর্বলতা ভুয়া তথ্য ছড়ানোর সুযোগ করে দিতে পারে। আর ভুয়া তথ্য যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে পারে।
বাইডেন যদি নির্বাচনে জিতেও যান, তারপরও তাঁর অক্ষমতা নিয়ে যেসব জল্পনা চলছে, তার জেরে বিভক্তি, অবিশ্বাস ও ভয়ের আবহ তৈরি হবে বলে মনে করেন সিএনএনের এই সাংবাদিক। তিনি বলেন, ইউক্রেনকে সহায়তায় বাইডেন কংগ্রেসকে রাজি করাতে পারবেন কি না, মধ্যপ্রাচ্য ও ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা বাড়লে অজনপ্রিয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার মতো রাজনৈতিক সক্ষমতা তাঁর থাকবে কি না, এসব বিষয়ে শঙ্কা দেখা দিতে পারে।
এদিকে বৃহস্পতিবারের বিতর্কের পর নিজের ও দলের ভাবমূর্তির যতটা ক্ষতি হয়েছে, তা ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বাইডেন। বিতর্কে যে তিনি ভালো করেননি, তা নিজ মুখেই স্বীকার করেছেন। এ-ও বলেছেন যে তিনি নির্বাচনে ট্রাম্পকে হারানোর বিষয়ে প্রত্যয়ী। বাইডেনের প্রতি এককাট্টা সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছেন বারাক ওবামা ও বিল ক্লিনটনের মতো জ্যেষ্ঠ নেতারা।
বিতর্ক বিপর্যয়ের পর ডেমোক্র্যাট শিবিরে আরেকটি ভয় দেখা দিয়েছে। তা হলো, তাদের নির্বাচনী তহবিলে অর্থদাতারা মুখ ফিরিয়ে নেবেন কি না? অর্থদাতাদের আশ্বস্ত করতে গতকাল শনিবার নিউইয়র্ক ও নিউ জার্সিতে তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠানে সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন বাইডেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আপনারা নিশ্চিত থাকুন, আমরা জিতব।’
নির্বাচনী তহবিলের বিষয়ে বাইডেনের নির্বাচনী প্রচার দলের প্রধান জেনিফার ও’ মালি ডিলন বলেন, বিতর্কের পর থেকে গত শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২ কোটি ৭০ লাখ ডলারের বেশি তহবিল সংগ্রহ করেছে ডেমোক্র্যাট শিবির। বৃহস্পতিবার রাতের পর একটি শ্রেণি হয়তো বাইডেনকে গোনার মধ্যে ধরছে না। তবে তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অঙ্গরাজ্যগুলো থেকে পাওয়া তথ্য বলছে ভিন্ন কথা।
source : প্রথম আলো