ডলারের দাম বাড়ায় মান হারাচ্ছে টাকা
ঢাকা অফিস : দেশে পণ্য আমদানির চাপ বাড়ার সঙ্গে ডলারের চাহিদাও বাড়ছে। বাড়তি চাহিদার কারণে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে দাম। ৫ আগস্টের পর থেকেই হঠাৎ ডলারের দাম বাড়তে শুরু করে। আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে এখন পর্যন্ত আড়াই মাসের ব্যবধানে ডলারের বিপরীতে ৮৫ পয়সা দর হারিয়েছে টাকা। ডলারের এর বিপরীতে মান হারাচ্ছে টাকা। সর্বশেষ আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে বৃহস্পতিবার প্রতি ডলারের মূল্য আরও ১০ পয়সা বেড়ে ৮৫ টাকা ৮০ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। তবে খোলাবাজারে ও নগদ মূল্যে ডলার আরও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। গত দু-তিনদিন একটু দাম কমলেও আবারও তা দুই টাকা বেড়ে ৯০ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে খোলাবাজারে। চলতি বছরের আগস্টের শুরু থেকে বাড়তে থাকে ডলারের দাম, যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে। অন্যদিকে ডলারের সঙ্গে সঙ্গে প্রায় সব বৈদেশিক মুদ্রার দাম বেড়েছে খোলাবাজারে। যদিও ব্যাংকগুলোতে এসব মুদ্রা দু-তিনদিন ধরে ধরে স্থিতিশীল রয়েছে। টাকার বিপরীতে ডলারের দাম বৃদ্ধির জন্য একাধিক কারণ বলছেন সংশ্লিষ্টরা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কয়েকজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গত দুই থেকে আড়াই বছর ধরে ডলারের দাম স্থিতিশীল ছিল, যা গত আগস্ট মাসের শুরুতেও প্রতি এক ডলারের দাম ছিল ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা। তবে ৫ আগস্টের পর থেকেই হঠাৎ ডলারের দাম বাড়তে শুরু করে। আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে এখন পর্যন্ত আড়াই মাসের ব্যবধানে ডলারের বিপরীতে ৮৫ পয়সা দর হারিয়েছে টাকা। তাদের মতে ‘বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ বেশি থাকাকালীন বেশি ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা মজুত রয়েছে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ব্যাংকগুলোর চাহিদার বিপরীতে ডলার বিক্রি করা হচ্ছে। বর্তমানে সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারের চাহিদা অনুযায়ী ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি অর্থবছরে (২০২১-২২) জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাজারে ৭৯ কোটি ডলার বিক্রি করেছে। ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, প্রায় দেড় বছর বৈশ্বিক মহামারী করোনা পরিস্থিতিতে সব কিছু স্থবির হয়ে পড়েছিল। করোনার পরে পরিস্থিতি বদলাতে থাকে, সব কিছু স্বাভাবিক হওয়ায় দেশে আমদানি চাপ বেড়েছে। এর পাশাপাশি করোনার টিকা আমদানির বিপরীতে অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে। তারা আরও বলছেন, টিকা আমদানির দায় পরিশোধে বাড়তি ডলারের প্রয়োজন হচ্ছে। তাছাড়া গত তিন মাস ধারাবাহিকভাবে কমছে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স। রফতানি আয়ও কমেছে। এসব কারণে বাজারে বৈদেশিক মুদ্রার চাহিদার তুলনায় সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এতে ডলারের দাম বেড়েছে, কমেছে টাকারা মান।