২০০৯ সালের ২৪শে নভেম্বর, ২৬ বছর বয়সী মেডিকেল ছাত্র জন এডওয়ার্ড জোনস তার ভাই ও বন্ধুদের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ইউটা অঙ্গরাজ্যের “নাটি পাটি” (Nutty Putty) গুহা অন্বেষণে যান। গুহার ভেতরের “বার্থ ক্যানেল” নামক একটি সরু পথ অতিক্রম করার সময় তিনি ভুল করে আরেকটি অনাবিষ্কৃত সুড়ঙ্গে ঢুকে পড়েন।
পথটি এতটাই সংকীর্ণ ছিল যে, জন মাত্র ১০ ইঞ্চি চওড়া ও ১৮ ইঞ্চি উঁচু একটি স্থানে মাথা নিচে ও পা উপরে থাকা অবস্থায় আটকে যান। প্রায় ৪০০ ফুট গভীরে, এক ভয়ংকর ফাঁ/দে আটকা পড়েন তিনি।
খবর পেয়ে উদ্ধারকারীরা দ্রুত চলে আসেন। প্রায় ২৮ ঘন্টা ধরে চলে শ্বাসরুদ্ধকর উদ্ধার অভিযান। রশি এবং পুলির সাহায্যে একটি জটিল সিস্টেম তৈরি করে তাকে বের করার চেষ্টাও করা হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, একটি পুলি ছিঁড়ে গেলে সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
বিজ্ঞানের চোখে এই মৃত্যু কতটা ভয়াবহ?
দীর্ঘ সময় ধরে উল্টো অবস্থায় ঝুলে থাকায় জনের শরীরের সমস্ত রক্ত মাথায় জমা হতে শুরু করে। এর ফলে মস্তিষ্কে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হয় এবং হৃদপিণ্ড স্বাভাবিকভাবে রক্ত সঞ্চালন করতে পারছিল না। সোজা কথায়, তার হৃদপিণ্ড এবং ফুসফুস ধীরে ধীরে অকেজো হয়ে পড়ছিল। এই অবস্থাকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলে ‘কম্প্রেশনাল অ্যাসফিক্সিয়া (Compressional Asphyxia)’। টানা ২৮ ঘন্টা এই অসহনীয় যন্ত্রণা সহ্য করার পর জন হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মা/রা যান।
উদ্ধারকাজ এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল যে, তার মৃ/তদেহ বের করে আনা সম্ভব ছিল না। পরিবারের সাথে আলোচনা করে এক হৃদয়বিদারক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গু/হাটিকেই জনের স/মাধি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
পরবর্তীতে, বি/স্ফোর/ক ব্যবহার করে গুহার ওই অংশটি ধসি/য়ে দেওয়া হয় এবং প্রবেশমুখ কংক্রিট দিয়ে স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়, যাতে ভবিষ্যতে এমন মর্মান্তিক ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। সেই থেকে নাটি পাটি গুহা একাধারে একটি সমা/ধি এবং এক অব্যক্ত বেদনার স্মৃ/তিস্তম্ভ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।