তার নাম চান্দ শাহ ফকির।

আসল নাম না–নকল নাম। আসল নাম সেকান্দর আলি। যারা মন্ত্র তন্ত্র নিয়ে কাজ করে তাদের অনেক রকম ভেক ধরতে হয়। নামও বদলাতে হয়। তাদের চাল-চলন, আচার-আচরণ সাধারণ মানুষের মত হলে চলে না। সাধারণ মানুষের ভয়, ভক্তি, শ্রদ্ধা অর্জনের জন্যে তাদের সারাক্ষণই নানান চেষ্টা চালাতে হয়।

চান্দ শাহ ফকিরকে দেখে সাধারণ মানুষের ভয়-ভক্তি-শ্রদ্ধা কোনটাই হয় না। রোগা, বেঁটে একজন মানুষ। বেঁটেরা সচরাচর কুঁজো হয় না, চন্দ শাহ খানিকটা কুঁজো। হাঁটে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে কারণ বাঁ পা বলতে গেলে অচল। বাঁ পা টেনে টেনে এগুতে হয়। অন্যান্য গুণীনদের মত মাথাভর্তি ঝাকড়া চুল আছে। চোখও সারাক্ষণই লাল থাকে। গলায় তিন রকমের হাড়, কাঠ এবং অষ্টধাতুর মালা আছে, তারপরেও চান্দ শাহকে সবাই তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে। তাকে চান্দ শাহ ফকির ডাকে না–ডাকে চান্দু। চান্দ শাহ তার স্ত্রীর কাছে এই নিয়ে খুব দুঃখ করে। দীর্ঘ নিঃশ্বাস চাপতে চাপতে বলে–দেখ বড় মানুষের বিচার। আমি এতবড় একটা গুণীন। পশু-পাখি পর্যন্ত আমারে সমীহ করে। যে গাছের নিচে বসি সেই গাছে পাখ-পাখালি থাকে না। উইড়া চইলা যায়। অথচ নিজ গ্রামের মানুষ আমারে তুচ্ছ করে। সামনে দিয়া যায়, সেলাম দেয় না। আমার যে নাম চান্দ শাহ ফকির, এই নামে ডাকে না, ডাকে চান্দু। মাঝে মাঝে ইচ্ছা করে মারী-মন্ত্র দিয়া এবারে একটা শিক্ষা দেই। জন্মের শিক্ষা।

চান্দ শাহের স্ত্রীর নাম ফুলবানু। সে দীর্ঘদিন রোগ ভোগ করে এখন বিছানায় পড়ে গেছে। নড়াচড়ার ক্ষমতা নেই তবে জিহ্বা অত্যন্ত সচল। সে তীক্ষ্ণ কণ্ঠে বলে–কি মন্ত্রের কথা কইলেন?



Read more...👇
https://www.anuperona.com/gunin-by-humayun-ahmed/

image
This page has been loaded 46553 times.