খেতে না চাওয়া টমি, উকুনে বিল্লুর চিকিৎসা হয় যে হাসপাতালে
***********************************************************************
টমির বয়স দেড় বছর। লালচে গায়ের রং। চার মাস ধরে খাবার মুখে তুলতে চাইছে না। খাবার মুখে দিলেই বেশির ভাগ সময় বমি করে উগরে দিচ্ছে। চেহারাটাও ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। এ কারণে টমিকে নিয়ে আসা হয় চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের এসএ কাদেরী টিচিং ভেটেরিনারি হাসপাতালে।

গত বুধবার দেশীয় জাতের কুকুর টমিকে ওই হাসপাতালে নিয়ে আসেন সজল বড়ুয়া। দেড় বছর ধরে টমিকে লালনপালন করছেন তিনি। সজল বললেন, আগে কখনো এমনটা হয়নি। টমিকে নানা ধরনের খাবার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কিছুই খেতে চাচ্ছে না। আগের চেয়ে রোগা হয়ে গেছে। পরে চিকিৎসকেরা কিছু ওষুধ দিয়েছেন।

শুধু সজল নন, নানা রোগে আক্রান্ত পশুপাখি নিয়ে প্রতিদিন গড়ে ১০০ ব্যক্তি ভিড় করেন এই হাসপাতালে। সকাল ৯টা থেকেই শুরু হয় হাসপাতালের কার্যক্রম। রোগীর তালিকায় দেশি-বিদেশি কুকুর ও বিড়ালের পাশাপাশি গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগিও থাকে। মানুষের মতো নানা রোগ নিয়ে আসে এসব প্রাণী। পরে চিকিৎসকেরা সেগুলোর প্রাণ বাঁচানোর চেষ্টা চালিয়ে থাকেন।

চিকিৎসকেরা বলছেন, মানুষের মতোই এই হাসপাতালে চিকিৎসা চলে প্রাণীদের। মৌসুমভেদে নানা রোগ নিয়ে প্রাণীদের আনা হয়। এখন শীত মৌসুমে ঠান্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে বেশি আসছে প্রাণী-পাখি আনছেন লোকজন।

হাসপাতালের শুরুটা যেভাবে
১৯৯৫-৯৬ সালে ৫০ শিক্ষার্থী নিয়ে নগরের পাহাড়তলী এলাকায় যাত্রা শুরু করে চট্টগ্রাম সরকারি ভেটেরিনারি কলেজ। ছোট পরিসরে হাসপাতালটিও চালু হয়েছিল সে সময়। টিনশেডের কয়েকটি কামরায় চলত চিকিৎসা কার্যক্রম। এরপর কয়েক বছরের মাথায় হাসপাতালটি নতুন রূপে যাত্রা শুরু করে। পাঁচতলা ভবনও পেয়ে যায়।

চট্টগ্রাম সরকারি ভেটেরিনারি কলেজই ২০০৬ সালে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে। এটি দেশের একমাত্র বিশেষায়িত ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়। পাশাপাশি জনবল নিয়োগ ও যন্ত্রপাতি সংযোজনে সমৃদ্ধ হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি হাসপাতালটিও।

হাসপাতালের পরিচালক মো. রায়হান ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, এখানকার চিকিৎসকেরা যত্ন নিয়েই প্রাণী ও পাখির চিকিৎসা করেন। জটিল অস্ত্রোপচার থেকে শুরু করে জ্বর-কাশি সব চিকিৎসাই দেওয়া হয়। প্রয়োজনে মেডিকেল বোর্ডও গঠন করা হয়। প্রাণীভেদে ২০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত ফি নেওয়া হয়।

Source: প্রথম আলো

image