কর্মস্থলে নিজেকে শান্ত রাখবেন যেভাবে

বিশ্বজুড়ে অনিশ্চয়তার আবহ প্রভাব ফেলছে কর্মজীবনেও। কাজের চাপ তো বরাবরই ছিল, সেই সঙ্গে জুড়েছে চাকরি হারানোর

বিশ্বজুড়ে অনিশ্চয়তার আবহ প্রভাব ফেলছে কর্মজীবনেও। কাজের চাপ তো বরাবরই ছিল, সেই সঙ্গে জুড়েছে চাকরি হারানোর আতঙ্ক। শুধু তাই নয়, সহকর্মীদের বাঁকা মন্তব্য, কাজের যথার্থ স্বীকৃতি না পাওয়া, কর্মক্ষেত্রে রাজনীতি, বসের কটূক্তি, অকারণ সমালোচনা বা সহকর্মীদের কর্মদক্ষতার অভাবের মতো ছোটবড় ঘটনাও সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে আপনার কর্মক্ষমতায়।

এছাড়া আর্থিক সংকট এখন সর্বস্তরের সমস্যা। আয় না বাড়লেও, খরচের হিসেব রাখতে গিয়ে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে সবাইকে। এই পরিস্থিতিতে কখনও মেজাজ হারিয়ে ফেলা অস্বাভাবিক নয়। তবে কর্মক্ষেত্র যেহেতু আপনার ব্যক্তিগত জায়গা নয়, এ কারণে সেখানে মাথা ঠান্ডা রেখে চলাই বুদ্ধিমানের কাজ।

কর্মস্থলে নিজেকে শান্ত রাখতে কিছু কৌশল অনুসরণ করতে পারেন। যেমন-

সহকর্মীদের মধ্যে কর্মদক্ষতার অভাব থাকলে বা আপনার সঙ্গে মতের অমিল হলে, কথায় কথায় অসন্তোষ প্রকাশ করবেন না। কারও কোনও আচরণ বা মন্তব্য অপছন্দ হলে বা পরিস্থিতি বিশেষে প্রয়োজন হলে অবশ্যই প্রতিবাদ করুন। তবে মনে রাখবেন, মাথা ঠান্ডা রেখেও কিন্তু যোগ্য জবাব দেওয়া সম্ভব। কর্মক্ষেত্রে কাজই আপনার দক্ষতার পরিচয়। নিঃশব্দে নিজের দায়িত্বটুকু পালন করে বেরিয়ে আসুন।

সহকর্মীদের সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ করতে গিয়ে অনেকাংশে সম্পর্ক ব্যক্তিগত হয়ে যায় ঠিকই, তবে কর্মক্ষেত্রের কোনও মন্তব্য বা ঘটনাকে ব্যক্তিগতভাবে না নেওয়াই ভালো। একইভাবে বাড়ির কোনও সমস্যা বা চিন্তার প্রভাব যেন কর্মক্ষেত্রে আপনার আচরণে না পড়ে, তাও সুনিশ্চিত করুন।

কারণে-অকারণে বস বা সিনিয়র সহকর্মীর রোষের মুখে পড়লে ঝগড়া করা বা পালটা জবাব দেওয়ার চেষ্টা করবেন না। আপনার লক্ষ্য হওয়া উচিত তাকে আপনার মনোভাব বুঝিয়ে বলা। গলা নামিয়ে, যতটা সম্ভব স্বাভাবিকভাবে উত্তর দিন। সেই মুহূর্তে তিনি বুঝতে না চাইলেও মনে রাখুন, আপনার রাগ পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলবে।

নিজের কোনও ভুল থাকলে তা স্বীকার করতে দ্বিধাবোধ করবেন না। ‘ইগো’শব্দটাকে যতটা সম্ভব দূরে সরিয়ে রাখুন। অনেকক্ষেত্রেই ভুল স্বীকার করে নিলে শুরুতেই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।

মনে রাখবেন, একবার কোনও কথা বলে ফেললে, তা ফিরিয়ে নেওয়া অসম্ভব। তাই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে কোনও মন্তব্য করার আগে অন্তত কয়েকবার তা ভেবে নিন।

কোনও মুহূর্তে একান্তই রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে, চুপচাপ সেখান থেকে সরে আসুন। দীর্ঘশ্বাস নিয়ে এক মিনিটের জন্য পুরো ঘটনাটা ভাবুন। চোখেমুখে পানির ঝাপটা দিন। বাইরে থেকে পুরো পরিস্থিতিটা দেখার চেষ্টা করুন। আবেগের বশে কোনও প্রতিক্রিয়া দেখাবেন না।

কাজের যথার্থ স্বীকৃতি না পেলে, মনে অসন্তোষ দানা বাঁধা স্বাভাবিক। আর দীর্ঘদিন সেই ক্ষোভ চেপে রাখলে, কখনও না কখনও তার বহিঃপ্রকাশ হবেই। চেষ্টা করুন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সামনে আপনার মতামত রাখার। একান্তই যোগ্য সম্মান না পেলে বা মানিয়ে নিতে না পারলে, সেখান থেকে বেরিয়ে আসাই ভালো।

মনে রাখবেন, অনিশ্চয়তা, আর্থিক টানাপড়েন, কাজের চাপ এখন প্রত্যেকেরই দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সকলে যদি তার মোকাবিলা করতে পারেন, তাহলে আপনিও পারবেন, এই বিশ্বাসটা নিজের মধ্যে আনতে হবে।


Linkeei Official

178 Blog postovi

Komentari
This page has been loaded 17658 times.