রেলওয়ের পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসে গ্রেপ্তার নোমানের নাম এসেছিল মেডিকেলে ভর্তির প্রশ্ন ফাঁসেও
***********************************************************************
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ২০১৫ সালে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে সাবেক সৈনিক নোমান সিদ্দিকীর জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছিল। কিন্তু তখন তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। অবশেষে বাংলাদেশ রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে ৭ জুলাই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ঘটনায় করা মামলায় নোমানকে জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য পেয়েছে সিআইডি।

কারাগারে থাকা সাবেক সৈনিক নোমান সিদ্দিকীসহ ছয়জনকে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে সিআইডি। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) যুগ্ম কমিশনার (প্রসিকিউশন) মোহাম্মদ আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ১৬ জুলাই তাঁদের রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।

সিআইডি সূত্র জানায়, রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম, আবু জাফর, সহকারী পরিচালক এস এম আলমগীর কবির, ডেসপাচ রাইডার খলিলুর রহমান, অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম, পিএসসির সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী, সাবেক সৈনিক নোমান সিদ্দিকীসহ ১৭ জন ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন।

পল্টন থানায় তাঁদের বিরুদ্ধে পরদিন সরকারি কর্ম কমিশন আইনে মামলা করে সিআইডি। মঙ্গলবার তাঁদের সিএমএম আদালতে তোলা হলে পিএসসির সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ ছয়জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়। সাবেক সেনাসদস্য নোমান সিদ্দিকীসহ বাকি ১১ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়।

তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, নোমানকে এখন ২০১৫ সালের মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে। নোমানসহ ১৭ জন স্বাস্থ্য ক্যাডার, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর, গণপূর্তের উপসহকারী প্রকৌশলী, উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা, অডিটর, নার্সিংসহ অন্তত ৩০টি নিয়োগ ও ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত। এ ব্যাপারে বুধবার সিআইডির গণমাধ্যম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মো. আজাদ রহমানের বক্তব্য নেওয়া হয়েছিল। পরে তিনি দাবি করেন যে ৩০টি নিয়োগ ও ভর্তি পরীক্ষার কথা তিনি প্রথম আলোকে বলেননি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, নোমান সিদ্দিকী পিএসসির সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীর কাছ থেকে প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করে তা মোটা অঙ্কের টাকায় বিক্রি করতেন। ফাঁস করা প্রশ্ন দিয়ে তাঁর স্ত্রীকেও অডিটর হিসেবে চাকরি পাইয়ে দেন। জিজ্ঞাসাবাদে নোমান সিদ্দিকী তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বলেছেন, ফাঁস করা প্রশ্নপত্র বিক্রি করে তিনি অন্তত পাঁচ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বরের সেনপাড়া পর্বতায় তিনি একটি ফ্ল্যাটের মালিক। এ ছাড়া পল্লবীর কালশীর পলাশনগরে ইত্তেহাদ নামের একটি পোশাক কারখানা রয়েছে তাঁর।

source : প্রথম আলো

image