এক পিতার নীরব ত্যাগ আর সেই কন্যারা যারা বদলে দিল পৃথিবী!
১৯৮৫ — পূর্ব আফ্রিকার এক শান্ত গ্রামের মানুষ ড্যানিয়েল দাঁড়িয়ে আছেন খালি পায়ে, সঙ্গে তার তিন মেয়ে। তার স্ত্রী আগের বছর সন্তান জন্মের সময় মারা গিয়েছিলেন। তিনি আর বিয়ে করেননি। সময় ছিল না—মনও ছিল না।
তিনি ছিলেন কৃষক, নির্মাতা, পিতা, আর স্বপ্নদ্রষ্টা—সব মিলিয়ে একজন মানুষ। তাদের ঘরে ছিল না বিদ্যুৎ। কিছু রাতে রাতের খাবার মানেই ছিল শুধু সেদ্ধ মূল আর পানি। কিন্তু যা তারা পেত—যা ড্যানিয়েল সবসময় নিশ্চিত করতেন—তা ছিল মর্যাদা।
প্রতিদিন ভোরের আগেই তিনি মেয়েদের জাগিয়ে তুলতেন এবং দুই মাইল হেঁটে নিয়ে যেতেন স্কুলে। তিনি নিজে পড়তে বা লিখতে পারতেন না, কিন্তু প্রতিদিন শ্রেণিকক্ষের বাইরে ছায়ায় বসে থাকতেন—শুধু যাতে মেয়েরা একা হেঁটে বাড়ি ফিরতে না হয়।
কখনও তিনি নিজে না খেয়ে থাকতেন, যাতে তারা একটি পেন্সিল কিনতে পারে। পরীক্ষার ফি দিতে নিজের বিয়ের আংটি বিক্রি করেছিলেন। হাতের পাঠ্যবই কিনতে—যার অনেক পৃষ্ঠাই অনুপস্থিত—ফসল তোলার মৌসুমে একসাথে তিনটি কাজ করতেন।
মানুষ হাসতো।
“ওরা মেয়ে,” তারা বলত।
“ওদের কী ভবিষ্যৎ আছে?”
ড্যানিয়েল কিছু বলতেন না।
তিনি শুধু মেয়েদের পাশে হেঁটে যেতেন।
বছর কেটে গেল। একে একে তারা স্নাতক হলো।
একে একে তারা বৃত্তি পেল।
এবং একে একে… তারা পাড়ি দিল সমুদ্র পেরিয়ে।
২০২৫ — সেই ছবির চল্লিশ বছর পর, বিশ্ব দেখল এক অপ্রত্যাশিত দৃশ্য: একটি নতুন ছবি—সেই একই মানুষ, এবার একটি হাসপাতালের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন—তার তিন মেয়ের সঙ্গে, সবার গায়ে সাদা কোট।
ডাক্তার তিনজনই।
যখন তাকে জিজ্ঞেস করা হলো তিনি কেমন অনুভব করছেন, ড্যানিয়েলের চোখে জল এসে গেল, আর আস্তে করে বললেন:
“আমি তাদের পৃথিবী দিতে পারিনি। শুধু পৃথিবীকে তাদের আশা কেড়ে নিতে দিইনি।”
তিনি হাত দিয়ে ফসল ফলিয়েছেন—কিন্তু হৃদয় দিয়ে গড়েছেন ডাক্তার। আর সেই নীরব মানুষটির ছায়ায়, যাকে পৃথিবী কখনও চিনত না, তিন কন্যা উঠে দাঁড়াল… আর বদলে দিল পৃথিবীকে। 💔🌍👩🏽⚕️