প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়, যুদ্ধক্ষেত্রে প্রয়োজন থেকেই উদ্ভাবনের জন্ম হয়—আর এর মধ্যে সবচেয়ে সৃজনশীল ও সাহসী উদ্ভাবনগুলোর একটি ছিল "গাছ ছদ্মবেশে নজরদারি পোস্ট"। এগুলো ছিল আসল মৃত গাছের আকৃতির স্টিলের তৈরি ফাঁপা কাঠামো, যা খুব নিখুঁতভাবে রং ও নকশার মাধ্যমে ছিন্নবিচ্ছিন্ন গাছের মতো দেখানো হতো। উদ্দেশ্য ছিল একটি নিরাপদ গোপন অবস্থান থেকে শত্রুর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা, যেন গুলির লক্ষ্য না হতে হয়।

এই ছদ্মবেশ গাছ বসানো ছিল এক জটিল ও বিপজ্জনক কাজ, যা সাধারণত রাতের অন্ধকারে করা হতো। সৈন্যরা প্রথমে একটি মৃত গাছ কেটে ফেলত এবং ঠিক একই স্থানে এই কৃত্রিম গাছ বসিয়ে দিত, যেন কেউ বুঝতে না পারে। ভিতরে ছিল একটি সরু কক্ষ, যাতে একজন পর্যবেক্ষক উঠতে পারত এবং একটি ক্ষুদ্র ছিদ্র বা পেরিস্কোপ দিয়ে বাইরে তাকাতে পারত। এখান থেকে তারা শত্রুর খুঁটি, ট্রেঞ্চ ও গতি পর্যবেক্ষণ করত, এমনকি কামানের আঘাত পরিচালনাও করত।

এই ধরনের নজরদারি গাছ খুব বেশি ব্যবহৃত হয়নি কারণ এগুলো তৈরি ও বসানোর প্রক্রিয়া ছিল খুবই কঠিন ও বিপজ্জনক। তবুও, এগুলো প্রথম বিশ্বযুদ্ধের ট্রেঞ্চ যুদ্ধের ভয়ঙ্কর বাস্তবতায় চরম সাহস, কৌশল ও সৃজনশীলতার অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে আছে। বর্তমানে যেসব নজরদারি গাছ সংগ্রহে রাখা আছে, সেগুলো আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় কিভাবে মানুষের মেধা ও সাহস বিপদের মধ্যেও আশ্চর্য উদ্ভাবন ঘটাতে পারে।

image