২০২০ সালে বিজ্ঞানীরা সাইবেরিয়ার বরফের নিচ থেকে ৩২ হাজার বছর আগেকার এক গণ্ডারের (woolly rhinoceros) হিমায়িত দেহাবশেষ খুঁজে পান। প্রাণীটি মারা যাওয়ার পর কিছু শিকারি প্রাণী তার দেহের একপাশ খেয়ে ফেলেছিল।

গণ্ডারটির ডান পাশ ভালোভাবে সংরক্ষিত আছে- চামড়া ও লোম আজও টিকে আছে। কিন্তু বাঁ পাশের অংশ প্রায় নষ্ট। লোমের মধ্যে ছোট ছোট জলজ প্রাণীর চিহ্নও পাওয়া গেছে, যা থেকে বোঝা যায় যে গণ্ডারটি হয়তো অগভীর পানিতে মারা গিয়েছিল।

রেডিওকার্বন পরীক্ষায় দেখা যায়, প্রাণীটি ৩২ হাজার বছরেরও আগে মারা গিয়েছিল, এবং তখনই বরফে জমে যায়। এই উলি গণ্ডাররা ৪ লাখ ৬০ হাজার থেকে ১২ হাজার বছর আগ পর্যন্ত উত্তর মেরুর তুন্ড্রা এলাকায় ঘুরে বেড়াত। তারা ছিল বিশাল আকারের, এবং ম্যামথের পরেই সেই সময়কার সবচেয়ে বড় তৃণভোজী প্রাণী। শীতল আবহাওয়ায় টিকে থাকার জন্য তাদের শরীরে ছিল ঘন লোমের আস্তরণ। তবুও বিজ্ঞানীরা এখনো এই প্রাণী সম্পর্কে খুব অল্পই জানেন।

২০২০ সালের আগস্টে গবেষকরা সাখা প্রজাতন্ত্রের টাইরেখতিয়াখ নদীর তীর থেকে এই গণ্ডারের দেহ খুঁজে পান। স্থানীয় এলাকার নাম অনুসারে এর নাম দেওয়া হয় “আবিয়স্কি গণ্ডার”। বর্তমানে এটি সাখা বিজ্ঞান একাডেমির হিমাগারে রাখা আছে।

গবেষকরা দেহটি কিছু সময়ের জন্য গলিয়ে চামড়া, লোম ও নরম টিস্যুর নমুনা সংগ্রহ করেন। দাঁত, শিং এবং পিঠের কুঁজের গঠনও পরীক্ষা করা হয়। গণ্ডারটির শিং ছিল প্রায় ৯.৪ ইঞ্চি লম্বা, যাতে তিন থেকে চারটি গাঢ় দাগ ছিল—যা সাধারণত গণ্ডারের বয়স নির্দেশ করে। দেহের উচ্চতা ছিল প্রায় ৪.৩ ফুট, যা থেকে ধারণা করা হয় প্রাণীটির বয়স ছিল প্রায় ৪ থেকে ৪.৫ বছর, অর্থাৎ তখনও প্রজননক্ষম হয়নি।

image