শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও এমনই বাস্তব উদ্যোগ নিয়েছে ইতালির টুসকানি অঞ্চলের ছোট্ট গ্রাম রাদিকনদোলি। একসময় প্রাণচঞ্চল মধ্যযুগীয় বসতি হলেও এখন তা প্রায় জনশূন্য। যেখানে আগে ৩ হাজারের মতো মানুষ থাকত, সেখানে এখন বাস করে মাত্র ৯৬৬ জন। গ্রামের ৪৫০টি বাড়ির মধ্যে শতাধিক খালি পড়ে রয়েছে।
সংবাদমাধ্যম সিএনএন -এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হারানো জনজীবন ফিরিয়ে আনতে স্থানীয় প্রশাসন এক অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে। গ্রামে গিয়ে বসবাস করলে দেওয়া হচ্ছে প্রায় ২৩ হাজার ডলার অর্থাৎ ২৮ লাখ টাকা পর্যন্ত নগদ সহায়তা।
রাদিকনদোলির মেয়র ফ্রানচেসকো গুয়ারগুয়ালিনি জানিয়েছেন, নতুন প্রোগ্রামে বাড়ি কেনার সহায়তা হিসেবে দেওয়া হবে ২০ হাজার ইউরো আর পরিবহন, সংস্কার ও অন্যান্য খরচে পাওয়া যাবে অতিরিক্ত ৬ হাজার ইউরো পর্যন্ত সহায়তা। এ ছাড়া স্থানীয় গড় ভাড়া যেখানে মাসে প্রায় ৪০০ ইউরো ছিলো, সরকারি ভর্তুকির পর তা নেমে আসবে মাত্র ২০ থেকে ২০০ ইউরোতে।
এই সুযোগ নিতে চাইলে কিছু শর্তও মানতে হবে। বাড়ি কিনে যারা স্থায়ী হবেন, তাদের কমপক্ষে ১০ বছর রাদিকনদোলিতে থাকতে হবে। আর যারা ভাড়া থাকবেন, তাদের থাকতে হবে অন্তত ৪ বছর।
স্থানীয় প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, রাদিকনদোলির বাড়িগুলোর দাম ৫০ হাজার থেকে ১ লাখ ইউরোর মধ্যে। বেশিরভাগ বাড়ি ভালো অবস্থায় আছে, কিছু বাড়িতে শুধু সামান্য সংস্কারের প্রয়োজন। মেয়র গুয়ারগুয়ালিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হলো রাদিকনদোলিকে আবারও প্রাণবন্ত করা। এই প্রকল্প শুধু বাড়ি বিক্রি নয়, এটি নতুন জীবনের আমন্ত্রণ।
উল্লেখ্য, ইতালির জনসংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। এর আগে, দেশটির আরও কয়েকটি অঞ্চল জনসংখ্যা বাড়াতে ‘এক ইউরোতে বাড়ি বিক্রি’-এর মতো প্রকল্প চালু করেছিল। তবে রাদিকনদোলির নতুন প্রোগ্রামটিকে বিশেষজ্ঞরা বলছেন বাস্তবসম্মত ও টেকসই উদ্যোগ। টুসকানির পাহাড়ঘেরা এই গ্রামটি এখন ইউরোপের সবচেয়ে আলোচিত বসবাস প্রকল্পগুলোর একটি। যেখানে শুধু নতুন জীবন শুরু করলেই পাওয়া যাচ্ছে টাকা, বাড়ি, আর প্রকৃতির শান্ত সৌন্দর্যের নিশ্চয়তা।