২৬ বছর বয়সী এক কৃষক মাঠে কাজ করছিলেন। দুপুরের আকাশটা ছিল ভারী, মেঘে ঢাকা। কেউ জানত না, কয়েক সেকেন্ড পরেই তার জীবনের সবচেয়ে বড় বজ্রপাত নেমে আসবে।

হঠাৎ প্রচণ্ড শব্দ—আলো ঝলক, তারপর অন্ধকার।
তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন, নিথর। প্রায় ১৫ মিনিট পর জ্ঞান ফিরে এলো, কিন্তু মনে নেই কিছুই—কি হয়েছিল, কোথায় ছিলেন, কিছুই না।
চিকিৎসকরা বললেন, তাঁর অ্যান্টেরোগ্রেড অ্যামনেশিয়া হয়েছে—অর্থাৎ, বজ্রপাতের পরের স্মৃতিগুলো পুরোপুরি হারিয়ে ফেলেছেন।

গলার চারপাশে আর বুকে দেখা গেল পোড়া দাগ—একটা অদ্ভুত নকশা। আসলে সেটি ছিল তাঁর গলায় থাকা লোহার লকেটের ছাপ, যেটার মধ্য দিয়েই বজ্রপাত শরীরে প্রবেশ করেছিল। তিনদিন পর্যবেক্ষণে রাখার পর তিনি পুরোপুরি সেরে ওঠেন, কিন্তু আজও সেই মুহূর্তের কিছুই মনে করতে পারেন না।

শুধু গলার দাগটা—স্মৃতি হয়ে রয়ে গেছে, যেন আকাশের সঙ্গে যুদ্ধের এক চিহ্ন। বজ্রপাত শুধু বিদ্যুৎ নয়, এটা প্রকৃতির এক নির্মম বাস্তবতা।
বাংলাদেশে প্রতিবছর শত শত মানুষ বজ্রাঘাতে প্রাণ হারায়, অথচ সামান্য সতর্কতা থাকলে এই মৃত্যুগুলো রোধ করা যায়।

নিরাপদ থাকার কিছু সহজ উপায়:
১️ বজ্রসহ বৃষ্টি শুরু হলে দ্রুত খোলা জায়গা (ধানক্ষেত, মাঠ, পুকুরপাড়) ছেড়ে আশ্রয় নিন।

২️ গাছের নিচে আশ্রয় নেবেন না—বজ্রপাত সবচেয়ে বেশি গাছেই আঘাত হানে।

৩️লোহার বস্তু যেমন কোদাল, ছাতা, লকেট, চেইন—সব খুলে ফেলুন।

৪️ ঘরে থাকলে বৈদ্যুতিক যন্ত্র (টিভি, ফ্রিজ, মোবাইল চার্জার) বন্ধ রাখুন।

৫️ গাড়িতে থাকলে জানালা বন্ধ রাখুন, সেটাই তুলনামূলক নিরাপদ আশ্রয়।

৬️ বজ্রপাতের সময় ফোনে কথা বলা বা গ্যাস লাইনের পাশে থাকা থেকেও বিরত থাকুন।

বজ্রপাত মুহূর্তের ঘটনা, কিন্তু তার পরিণতি আজীবন বয়ে বেড়াতে হয়।
তাই আকাশ যখন গর্জে ওঠে—দৌড়াবেন না, আশ্রয় নিন।
জীবন আপনার, রক্ষা করাটাই সবচেয়ে বড় বুদ্ধিমত্তা।

image