নেপালের মাকাওয়ানপুর জেলার মানাহারিতে ঘটেছিল এক অবিশ্বাস্য ঘটনা —
সময়টা ২০২৩ সালের এক গভীর রাত। নেপালের মাকাওয়ানপুর জেলার মানাহারির পাদদেশে, এক নিরিবিলি পাহাড়ি গ্রাম। চারদিকে বন, পাহাড় আর ঝিরঝিরে পানির নদীর কলতান।
গোয়ালে মহিষটি বাঁধা ছিলো না। গেরস্থের মহিষ বড় আদরের। ভীম সেনের (মহিষের মালিক) সাথে সাথে বাধ্য মেয়ের মত সব খানে ঘুরে বেড়াতো। মহিষটি বড় বাধ্য ছিলো ভীম সেনের, তাই তার গলায় কখনও দড়ি দিত না। ঘটনায় আসা যাক -
গ্রামের সকলে তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। ততক্ষণে চাঁদের আলো ফিকে হয়ে এসেছে। কুকুরগুলো অকারণ ঘেউ ঘেউ করছে, বাতাসে অজানা গন্ধ।
সেই ভয়াবহ রাতে ভীম সেন ঘুমোচ্ছে। আর তার একমাত্র সম্বল মহিষ, নাম তার "কালোডুমা" কাঠের তৈরি গোয়ালঘরে শান্তভাবে দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎই, বুক হিম করা এক মৃদু গর্জন। ছায়ার মতো নিঃশব্দে এক বাঘ ঢুকে পড়েছে গোয়ালে— শিকার করতে এসেছে মহিষটাকে।
বাঘের চোখে রক্ত, ক্ষুধায় উন্মত্ত। সে ঝাঁপিয়ে পড়ল!
মুহূর্তেই গোটা ঘর কেঁপে উঠল কালোডুমার তীব্র প্রতিরোধে। সে পিছিয়ে গেল না— সোজা শিং উঁচু করে ঝাঁপিয়ে পড়ল বাঘের উপর!
ধুলোর ঝড় উঠল গোয়ালের ভেতরে। বাঁশ-কাঠ ভাঙার শব্দ, ধস্তাধস্তি। সেই মুহূর্তে এক অসম লড়াই শুরু হল— প্রকৃতির দুই মহা শক্তির মাঝে। কতক্ষণ চলেছিল সে ভয়ংকর লড়াই তা কেউ ঠিক করে বলতে পারে না।
তবে একসময় সব শান্ত হয়ে আসে। সারা রাত ভয়ে কেউ ঘর থেকে বের হতে পারেনি। ভোরবেলা গ্রামবাসীরা ছুটে এসে দেখে, বাঘটি নিথর পড়ে আছে— কালোডুমার শিং-এর আঘাতে। মহিষটি ছিল শক্তিশালী আর নির্ভীক। শেষ পর্যন্ত বাঘটি মারা যায় মহিষের আক্রমণে!
প্রকৃতির খেলাটা এমনই —
সবসময় শিকারীই জেতে না, কখনও কখনও শিকারও প্রতিরোধ গড়ে তোলে নিজের শক্তিতে।