গিউলিয়া তোফানা নিজে সরাসরি হত্যাকারী ছিলেন না, কিন্তু তিনি ছিলেন সপ্তদশ শতকের ইতালিতে শত শত স্বামী-হত্যার নেপথ্যের কারিগর। তিনি "অ্যাকোয়া তোফানা" (Aqua Tofana) নামক একটি বিষ তৈরি ও বিক্রি করতেন, যা ছিল বর্ণহীন, স্বাদহীন এবং ধীর-ক্রিয়াবিশিষ্ট ।
স্ত্রীরা তাদের স্বামীদের খাবার বা পানীয়ে এই বিষ অল্প অল্প করে মিশিয়ে দিতেন। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে স্বামীর মৃত্যু ঘটত, যা দেখে মনে হতো তিনি কোনো অজানা রোগে মারা গেছেন। তোফানার মা-ও তার স্বামীকে বিষ প্রয়োগে হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হয়েছিলেন।
তোফানার ক্লায়েন্ট ছিলেন মূলত সেইসব মহিলারা, যারা abusiv বা অসুখী দাম্পত্য জীবনে বন্দী ছিলেন। সেই যুগে মহিলাদের জন্য আইনগতভাবে বিবাহবিচ্ছেদ বা সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার কোনো পথ খোলা ছিল না।
তোফানার এই গোপন ব্যবসা একসময় ফাঁস হয়ে যায় এবং তাকে তার বেশ কিছু ক্লায়েন্টসহ মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তোফানার ঘটনাটি কেবল একটি সিরিয়াল কিলিং-এর ঘটনা নয়; এটি একটি সামাজিক-আইনি ব্যবস্থার ব্যর্থতার ঐতিহাসিক প্রমাণ। তার বিষের জন্য একটি শক্তিশালী *বাজার* তৈরি হয়েছিল, কারণ সেই সময়ের নারীদের কাছে নিপীড়নমূলক বিবাহ থেকে মুক্তির আর কোনো উপায় ছিল না। এটি ছিল পরাধীনতার বিরুদ্ধে একটি অন্ধকার এবং মরিয়া প্রতিক্রিয়া।