নিউজিল্যান্ডের সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানীরা এমন এক আশ্চর্য আবিষ্কার করেছেন, যা বিজ্ঞানের পুরো ভিত্তিকেই চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে। তারা আবিষ্কার করেছেন Thiomargarita magnifica — এমন এক ব্যাকটেরিয়া যা খালি চোখেই দেখা যায়!
এটি সাধারণ ব্যাকটেরিয়ার চেয়ে প্রায় ৫,০০০ গুণ বড়, এবং সাদা সূক্ষ্ম সুতার মতো দেখতে যা দৈর্ঘ্যে ২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। অর্থাৎ, কোনো মাইক্রোস্কোপ ছাড়াই এটি দেখা সম্ভব।
সাধারণ ব্যাকটেরিয়ার আকার: ১–৫ মাইক্রোমিটার
এই ব্যাকটেরিয়ার আকার: ২০,০০০ মাইক্রোমিটার (২ সেন্টিমিটার)
এই আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের মাথায় যেন বাজ ফেলে দিয়েছে, কারণ—
ব্যাকটেরিয়া কখনোই খালি চোখে দেখার মতো বড় হওয়ার কথা নয়
এর কোষের ভেতরে আছে ঝিল্লিবেষ্টিত অভ্যন্তরীণ অংশ, যা সাধারণত শুধু প্রাণী, উদ্ভিদ ও ছত্রাকের কোষেই থাকে
এমনকি এর ডিএনএ আলাদা করে আবদ্ধ, অনেকটা “নিউক্লিয়াস”-এর মতো — যা আগে কোনো ব্যাকটেরিয়ায় দেখা যায়নি
এর জিনোম (DNA) পৃথিবীর অন্য যেকোনো ব্যাকটেরিয়ার তুলনায় প্রায় তিনগুণ বড়
এই আশ্চর্য প্রাণীগুলো ক্যারিবিয়ান দ্বীপের ম্যানগ্রোভ অরণ্যের পচা পাতার ওপর বেড়ে ওঠে। শুরুতে বিজ্ঞানীরা ভেবেছিলেন এগুলো হয়তো একাধিক ব্যাকটেরিয়ার উপনিবেশ, কিন্তু পরে জেনেটিক বিশ্লেষণে জানা যায় — এটি একটিই একক কোষ!
এই আবিষ্কার পুরো মাইক্রোবায়োলজির পাঠ্যবই পাল্টে দিচ্ছে। এতদিন আমরা শিখেছি, ব্যাকটেরিয়া হলো সাধারণ প্রোক্যারিওটিক জীব— যাদের কোনো নিউক্লিয়াস বা জটিল গঠন নেই। কিন্তু Thiomargarita magnifica প্রমাণ করল, প্রকৃতি নিজেই নিয়ম ভাঙে, আর জটিলতার জন্ম একাধিক পথে ঘটতে পারে।
জ্যোতির্বিজ্ঞানের দৃষ্টিতেও এর প্রভাব বিশাল!
যদি পৃথিবীর ব্যাকটেরিয়াই এত বিশাল ও জটিল হতে পারে, তবে অন্য গ্রহে জীবনের রূপ কেমন হতে পারে?
হয়তো আমরা “মাইক্রোব” খুঁজে খুঁজে ভুল করছি, অথচ তারা আমাদের চোখের সামনেই লুকিয়ে আছে, ঠিক এই দৈত্যাকার ব্যাকটেরিয়ার মতো!