যখন রেডিয়েশন ছিল ফ্যাশন! (স্কিপ করতে পারেন)

নিচের ছবিটি ১৯৫০-৬০ এর দশকের এক সাধারণ চিত্র। একজন নারী বসে আছেন আর ডাক্তাররা তার গলায় এক্স-রে মেশিন তাক করেছেন। তখনকার দিনে এটাই ছিল আধুনিকতার প্রতীক, রোগ নির্ণয়ের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি।

এটার পেছনের গল্পটা জানবো আসুন।

সেই সময়টাতে মানুষ রেডিয়েশন বা তেজস্ক্রিয়তাকে ভয় পেত না, বরং মুগ্ধ ছিল। এর ব্যবহার এতটাই সহজ আর সাধারণ ছিল, যা আজকের দিনে আমরা কল্পনাও করতে পারবো না। যেমন:

১. জুতার দোকানে এক্স-রে: পায়ের সঠিক মাপের জুতো খুঁজে বের করার জন্য দোকানে দোকানে এক্স-রে মেশিন থাকতো, যা দিয়ে পায়ের ভেতরের হাড়ের গঠন দেখে জুতো ফিটিং করা হতো!

২. ব্রণ সারাতে এক্স-রে: অবাক হলেও সত্যি, ত্বকের নানা সমস্যা, এমনকি ব্রণ সারানোর জন্যও এক্স-রে থেরাপি দেয়া হতো। 👧

৩. তেজস্ক্রিয় এনার্জি ড্রিংক: তখন বাজারে “এনার্জি ড্রিংক” হিসেবে রীতিমতো তেজস্ক্রিয় পানি বিক্রি হতো! রেডিয়াম (Radium) মেশানো এই পানিকে বলা হতো স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এবং শক্তিদায়ক। 🫨

সেই যুগে তেজস্ক্রিয়তার দীর্ঘমেয়াদী বিপদ সম্পর্কে মানুষের ধারণা ছিল খুবই কম। ছবিতে ডাক্তারদের দেখুন, তাদের পরনে তেমন কোনো সুরক্ষামূলক পোশাকও নেই। তেজস্ক্রিয়তার মারাত্মক ঝুঁকিকে হয় জানা সত্ত্বেও এড়িয়ে যাওয়া হতো, অথবা এর ভয়াবহতা সম্পর্কে মানুষ ছিল পুরোপুরি অজ্ঞ।

উদ্ভাবন বা আবিষ্কার দারুণ জিনিস, কিন্তু তার সাথে দায়িত্ববোধ থাকাটা তার চেয়েও বেশি জরুরি। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাস শুধু সফলতার গল্প বলে না, বরং ভুল থেকে শেখা যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতার কথাও স্মরণ করিয়ে দেয়। প্রতিটি বড় অগ্রগতির জন্য শুধু সাহস নয়, সতর্কতা, নৈতিকতা এবং নিজেদের ভুল স্বীকার করার মতো মানসিকতাও প্রয়োজন। 🕵️🫨

image