সেই বাসচালকের সহকারী ভাবনার গল্প নিয়ে এবার নাটক
***********************************************************************
২০২১ সালের ১৭ ডিসেম্বর ‘বাসের হেলপারি করি, খারাপ কাজ তো করি না’ শিরোনামে একটি লেখা প্রথম আলোর রাজধানী পাতায় ছাপা হয়েছিল। বেসরকারি একটি বাসের চালকের সহকারী ভাবনা আক্তারকে নিয়ে ছিল লেখাটি। সেই লেখা থেকে উজ্জীবিত হয়ে একটি নাটক তৈরি হচ্ছে। নাটকের নাম রাখা হয়েছে ‘জীবন যেখানে যেমন’। নাটকটির পরিচালক আলোক হাসান জানিয়েছেন, পত্রিকার ওই লেখায় ভাবনা চরিত্রটিতে অনুপ্রাণিত হয়ে নাটকটি তৈরি হচ্ছে। শুক্রবার ঢাকার বিভিন্ন লোকেশনে শেষ হয়েছে নাটকটির শুটিং। ভাবনা আক্তারের চরিত্রে অভিনয় করছেন অভিনেত্রী সাফা কবির।
পত্রিকার পাতার গল্প পর্দায় তুলে আনার ব্যাপারে নাটকটির পরিচালক বলেন, ‘কাজটি বর্তমান প্রাসঙ্গিক। বেসরকারির পাশাপাশি এখন তো সরকারের বিআরটিসি বাসে নারী সহকারীর ব্যবস্থা আছে। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও স্বাধীনভাবে এই পেশায় কাজ করতে পারেন। এটিও নারীদের জন্য একটা বড় কর্মক্ষেত্র হতে পারে। নাটকে বিষয়টি তুলে আনতে পারলে অনেকেই দেখার সুযোগ পাবেন। এই কাজে মেয়েদের অনেকে উৎসাহিত হবেন।’
পত্রিকায় লেখা ভাবনা আক্তারের চরিত্রে নাটকে পারুল নামে অভিনয় করছেন সাফা কবির। এ ধরনের চরিত্রে অভিনয় তাঁর প্রথম অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, ‘পরিচালক যখন আমাকে পত্রিকার পাতার গল্পটি শোনান, তখনই মনে হয়েছে এটি ভিন্ন রকমের একটা কাজ হতে পারে। এরপর পত্রিকার লেখাটি পড়ি। পরে চিত্রনাট্যটি পড়ে খুব ভালো লাগল। মনে হলো, সমাজে একটা বার্তা যেতে পারে এই চরিত্রে কাজের মধ্য দিয়ে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা শিল্পীরা যারা নাটকে অভিনয় করি, তারা কেবল শুধুই নাটক করার জন্য করি না। চরিত্রগুলো সমাজের কথা বলে। এই ভাবনা চরিত্ররূপী যে পারুল চরিত্রটি আমি করছি, এই চরিত্রটি নাটকের মাধ্যমে বেশি মানুষের কাছে পৌঁছাবে।’
সাফা জানান, নাটকটির চিত্রনাট্য তৈরির সময় গবেষণা করতে গিয়ে দেখেছেন, এই পেশায় মেয়েরা আগ্রহী হয়ে কাজ করতে আবেদন করছেন। বর্তমান মন্ত্রণালয়ে প্রায় ৩০০ মেয়ের আবেদন জমা পড়েছে। প্রথম আলোর প্রতিবেদককে চালকের সেই সহকারী ভাবনা বলেছিলেন, অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করার সুযোগ পেয়েছেন ভাবনা। এর আগে তিনি একটি দোকানে বিক্রয়কর্মী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি জানান, মার্কেটে দোকানের কাজ তুলনামূলক সহজ ছিল, কিন্তু সময় দিতে হতো অনেক বেশি। মার্কেট বন্ধ হলে বাড়ি ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হতো। এর ফলে সংসারের কাজ করতে পারতেন না। আর এখন কাজটা কঠিন, কষ্টের, তবে সম্মান আছে। সময়ও পাওয়া যায় অনেক। শুক্র ও শনিবার দুই দিন ছুটির পাশাপাশি সরকারি বিভিন্ন দিবসের ছুটিও পাওয়া যায়। সকালে ডিউটি থাকলে বেলা দুইটার মধ্যে আর বিকেলে ডিউটি থাকলে রাত আটটার মধ্যে বাড়ি ফিরতে পারেন। অসুস্থতা বা অন্য কোনো কারণে কাজে অনুপস্থিত থাকলেও বেতন কাটার ভয় নেই।’
নাটকটি লিখেছেন শফিকুর রহমান। এতে আরও অভিনয় করছেন মনোজ প্রামাণিক, শম্পা নিজাম, আমানুল হক। নাটকের শুটিং হয়েছে রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে, শাপলা চত্বর, কুড়িল ফ্লাইওভার ও আবদুল্লাহপুরের কামারপাড়া বাসস্ট্যান্ডে। এটি চ্যানেল আইয়ে প্রচার হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
Source: প্রথম আলো
Md Parvaj Mollick
टिप्पणी हटाएं
क्या आप वाकई इस टिप्पणी को हटाना चाहते हैं?