‘ইসরায়েলের কোনো জায়গা হিজবুল্লাহর রকেট থেকে রেহাই পাবে না’
***********************************************************************
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গত মঙ্গলবার ঘোষণা দিয়েছে, তারা লেবাননে সামরিক অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। জবাবে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ জানিয়েছে, লেবাননে হামলা চালানো হলে ইসরায়েলের কোনো স্থানই তাদের রকেট থেকে রেহাই পাবে না।
হিজবুল্লাহপ্রধান হাসান নাসরাল্লাহ গতকাল বুধবার টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে এই হুঁশিয়ারি দেন। এমন পাল্টাপাল্টি হুমকির কারণে গাজা যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা আরও বেড়েছে।
ইসরায়েলের পাশাপাশি এবার লেবাননের অদূরে অবস্থিত ভূমধ্যসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র সাইপ্রাসেও হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছেন নাসরাল্লাহ। লেবাননে হামলা চালানোর জন্য ইসরায়েলকে নিজেদের আকাশসীমা খুলে দিলে দেশটিতে হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছেন তিনি।
সাইপ্রাসে ব্রিটেনের দুটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। দুটি ঘাঁটির একটি বিমানবাহিনীর ঘাঁটি। হিজবুল্লাহর হুমকির মুখে সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট নিকোস ক্রিস্টোডৌলিদেস বলেছেন, ‘(গাজা) যুদ্ধের সঙ্গে তাঁর দেশ জড়িত নয়। তাঁরা বরং সমাধানের অংশ। (তাঁদের সমাধান প্রচেষ্টার বিষয়টি) পুরো আন্তর্জাতিক মহল কর্তৃক স্বীকৃত।
সমাধানের অংশ বলতে সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানোর জন্য সমুদ্রপথে জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে তাঁর দেশের ভূমিকার কথাও বলেছেন। এদিকে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যখন পাল্টাপাল্টি হুমকি চলছে, তখন গাজায় বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল।
source : প্রথম আলো
গরমে পুড়ছে চার মহাদেশের অনেক দেশ, তাপমাত্রা আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা
***********************************************************************
উত্তর গোলার্ধে শুরু হয়েছে গ্রীষ্মকাল। তবে গরমের আঁচ শুধু উত্তরেই সীমিত নেই। তাপপ্রবাহ যেন জ্বালা ধরিয়ে দিচ্ছে বিশ্বের চারটি মহাদেশের বিভিন্ন শহরে। এই গরমের কারণে ঘুরেফিরে আসছে জলবায়ু পরিবর্তনের কথা।
আশঙ্কা—জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে এবারের তাপমাত্রা আগের বছরকে ছাড়িয়ে যাবে। গত বছরে গ্রীষ্মকালের তাপমাত্রা ছিল ২ হাজার বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
গত কয়েক দিনে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের তাপমাত্রা রেকর্ড পর্যায়ে পৌঁছেছে। চলতি সপ্তাহে সৌদি আরবে প্রায় ২০ লাখ মুসলমান পবিত্র হজ পালন করেছেন। তখন মক্কা ও মদিনায় তাপমাত্রা ছিল ৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি। গরমে প্রায় এক হাজার হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার মিসরের কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, এবার হজে অংশ নেওয়া দেশটির অন্তত ৫৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনো নিখোঁজ ৪০ জন।
গরমে পুড়ছে ভূমধ্যসাগর অঞ্চলও। তাপপ্রবাহের কারণে সেখানে দাবানল সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমোসফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দাবানলের আগুন ছড়িয়ে পড়েছে পর্তুগাল থেকে গ্রিস পর্যন্ত। আলজেরিয়ায় আফ্রিকার উত্তর উপকূলও জ্বলছে দাবানলের আগুনে।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, চলতি সপ্তাহে সার্বিয়ায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে থাকতে পারে। গরমের কারণে সেখানে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মানুষকে ঘরের বাইরে থাকতে মানা করা হচ্ছে। রাজধানী বেলগ্রেডের জরুরি সেবা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, অসুস্থ হয়ে বুধবার রাতে ১০৯ বার চিকিৎসকের কাছে সহায়তা চেয়েছে মানুষ। প্রতিবেশী দেশ মন্টেনেগ্রোর অবস্থাও ভয়াবহ।
বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটকদের কাছে একটি আকর্ষণীয় গন্তব্য ইউরোপ। তবে ভয়াবহ গরমের কারণে এ বছর সেখানে বহু পর্যটকের মৃত্যু ও নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। গ্রিসের মাথরাখি দ্বীপে ৫৫ বছর বয়সী একজন মার্কিনের মৃত্যু হয়েছে বলে গত সোমবার জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ। তাঁকে নিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বীপটিতে তিন পর্যটকের মৃত্যু হলো।
যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পূর্ব ও মধ্য পশ্চিম অঞ্চলের কিছু কিছু এলাকায় তীব্র গরমের কারণে আজ সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছিল। জরুরি ব্যবস্থার আওতায় নিউইয়র্কে চলতি বছরে প্রথমবারের মতো ‘কুলিং সেন্টারগুলো’ (গরমের মধ্যে বিশ্রামের জন্য শীতাতপনিয়ন্ত্রিত স্থান) খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া অফিসগুলো অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে তীব্র তাপপ্রবাহের সতর্কতা জারি করেছে। সেখানে তাপমাত্রা ৪৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ভারতে সাধারণত মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত গ্রীষ্মকাল চলে। এরপর আসে বর্ষাকাল। তখন ধীরে ধীরে গরম কমতে শুরু করে। তবে গতকাল বুধবার রাজধানী নয়াদিল্লিতে ৫৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণ রাত রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় শহরটিতে তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে রাতের তাপমাত্রা বাড়ছে। আর বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে দিনের তুলনায় রাত দ্রুত উষ্ণ হয়ে পড়ছে।
ভারতের আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, গত ১৪ মে থেকে টানা ৩৮ দিন ধরে নয়াদিল্লির তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি বা এর বেশি রয়েছে। গতকাল দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পয়লা মার্চ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত শহরটিতে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ সময় গরমের কারণে অন্তত ১১০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। তাপপ্রবাহের হার বাড়ছে ভারতের উত্তর-পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলেও।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) বলছে, চলতি বছরের পরের মাসগুলোতে তাপমাত্রা ২০২৩ সালের রেকর্ড তাপমাত্রাকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ৮৬ শতাংশ। এতে করে এ বছর সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নতুন রেকর্ড হবে। এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির পেছনে কাজ করছে জলবায়ু পরিবর্তন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘন ঘন তাপপ্রবাহ দেখা দিচ্ছে। সেগুলো আরও দীর্ঘস্থায়ী ও তীব্র হচ্ছে।
আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক গবেষণা সংস্থা ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিউশনের (ডব্লিউডব্লিউএ) আশঙ্কা—শিল্পায়ন-পূর্ব সময়ে প্রতি ১০ বছরে যে তাপপ্রবাহ গড়ে একবার দেখা দিত, তা এখন ২ দশমিক ৮ বার দেখা যাবে। আর এখনকার তাপপ্রবাহগুলো ১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি উষ্ণ হবে।
মানুষ যত জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়াবে ততই এই তাপপ্রবাহ তীব্র হবে বলে সতর্ক করছেন বিজ্ঞানীরা। ডব্লিউডব্লিউএর হিসাবে—বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে পৃথিবীর তাপমাত্রা যদি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেড়ে যায়, তাহলে প্রতি ১০ বছরে গড়ে ৫ দশমিক ৬ বার তাপপ্রবাহ দেখা দেবে। আর সেগুলোর তাপমাত্রা হবে আগের তুলনায় ২ দশমিক ৬ ডিগ্রি বেশি।
source : প্রথম আলো
মিয়ানমারের জান্তার বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভঙ্গের অভিযোগ
***********************************************************************
মিয়ানমারের জান্তা সরকার যুদ্ধবিরতি চুক্তি বারবার ভঙ্গ করছে বলে অভিযোগ তুলেছে দেশটির জাতিগত সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর জোট থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স। জোটের সদস্যেদর দাবি, চীনের মধ্যস্থতায় যুদ্ধিবরতি চুক্তি সত্ত্বেও সামরিক বাহিনী (জান্তা) চলতি মাসে দেশটির উত্তরাঞ্চলে বারবার হামলা চালিয়েছে। এতে অনেক বেসামরিক মানুষ হতাহত হয়েছে।
থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সদস্য তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) জোটের টেলিগ্রাম চ্যানেলে এক বিবৃতি পোস্ট করে। সেখানে বলা হয়, বুধবার টিএনএলএর নিয়ন্ত্রণাধীন মোগক শহরে বিমান হামলা চালিয়েছে জান্তা সেনারা। এ ঘটনায় একজন বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে ১০ বছরের এক শিশুসহ তিনজন।
এর আগে গত মঙ্গলবার সামরিক বাহিনীর ড্রোন হামলায় টিএনএলএর এক সদস্য নিহত এবং চারজন আহত হন বলেও দাবি করে গোষ্ঠীটির। তাদের ভাষ্য, এ ছাড়া তাদের ঘাঁটিগুলোতে গোলা নিক্ষেপ করেছে এবং সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে। ফলে গোষ্ঠীটির নিয়ন্ত্রিত শহরগুলোয় পণ্য সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এসব হামলা ছিল জান্তা সামরিক বাহিনীর চালানো সাম্প্রতিক সময় যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের ঘটনা।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সু চির নির্বাচিত সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। ক্ষমতা দখলের পরপরই মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভ শুরু হয়। গণবিক্ষোভ দমনে সামরিক শক্তি ব্যবহার করে জান্তা সরকার। এর জেরে মিয়ানমারে জান্তা সরকারবিরোধী সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হয়। একপর্যায়ে দেশটির জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো একটি জোট গঠন করেছে। থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স নামের এই জোটে আছে আরাকান আর্মি (এএ), মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ) ও তাং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ)।
২০২৩ সালের অক্টোবরে এই জোট সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান শুরু করে। মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলে আচমকা অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি শহর ও চীনের সীমান্তবর্তী কিছু বাণিজ্যিক কেন্দ্রও হস্তগত করে তারা। জান্তা সরকারকে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু ও কোণঠাসা করে দেওয়ার লক্ষ্যেই মূলত তারা এ হামলা চালায়।
এ জোটের সঙ্গে সামরিক জান্তার মাসের পর মাস ধরে চলা সহিংসতায় ৫ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এ সংকট নিরসনের লক্ষ্যে চলতি বছরের জানুয়ারিতে চীনের মধ্যস্থতায় সামরিক জান্তা ও থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষর হয়। চুক্তির ফলে জোটটি মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের শান প্রদেশে দখলকৃত ভূখণ্ড নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখার অনুমতি পায়।
এদিকে শান প্রদেশে সংঘাত কিছুটা কমে আসার পর উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাখাইন। পশ্চিমাঞ্চলের এ রাজ্যে সহিংস হয়ে ওঠে আরাকান আর্মি (এএ)। তাদের ভাষ্য, রাখাইন জনগোষ্ঠীর আরও বেশি স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে এ লড়াই। এরই মধ্যে তারা রাখাইনে ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলো নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।
চীন গত মাসে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী ও থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের মধ্যকার যুদ্ধবিরতি চুক্তির ধারাবাহিকতায় কুনিমিং শহরে একটি শান্তি আলোচনার আয়োজন করে। এমএনডিএএর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র এএফপিকে জানায়, এ সংলাপে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি। সংকট নিরসনে ভবিষ্যতে উভয় পক্ষ আবার আলোচনায় বসবে।
এদিকে দেশটির চলমান এই অস্থিরতা নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বাণিজ্য খাতে। বিশেষ করে ধস নেমেছে সীমান্ত বাণিজ্যে। জান্তা–নিয়ন্ত্রিত একটি সংবাদমাধ্যম গত সপ্তাহে জানায়, চলতি বছরের এপ্রিল-মে মাসে চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্ত বাণিজ্য গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় তিন গুণ কমেছে।
মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতেই মূলত জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বেশির ভাগের বসবাস। ১৯৪৮ সালে যুক্তরাজ্যের কাছে থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই স্বায়ত্তশাসন ও সম্পদের ওপর নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে সামরিক জান্তার সঙ্গে লড়াই করছে এসব বিদ্রোহী গোষ্ঠী।
source : প্রথম আলো
দামি গাড়ি পেয়ে পুতিনকে কী উপহার দিলেন কিম
***********************************************************************
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে এক জোড়া কুকুর উপহার দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং–উন। কুকুর দুটি স্থানীয় পুংসান জাতের। এই কুকুর শিকারের কাজে ব্যবহার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ।
দুই দিনের সফরে গত মঙ্গলবার পিয়ংইয়ং বিমানবন্দরে পৌঁছান পুতিন। দেশটিতে গতকাল বুধবার একটি কৌশলগত প্রতিরক্ষা চুক্তিতে সই করেন তিনি। পরে আজ সেখান থেকে ভিয়েতনামে যান রুশ প্রেসিডেন্ট।
উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন চ্যানেলে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সাদা রঙের বেড়া দিয়ে ঘেরা একটি জায়গায় কুকুর দুটিকে রাখা হয়েছে। পুতিনকে সেগুলো দেখাচ্ছেন কিম। একটি ঘোড়া নিয়েও মেতে থাকতে দেখা যায় দুজনকে। এর আগে বুধবার কিমকে রাশিয়ার তৈরি বিলাসবহুল একটি গাড়ি উপহার দেন পুতিন।
কিম নিজে একজন ঘোড়াপ্রেমী। ২০১৯ সালে তুষারের মধ্যে সাদা রঙের একটি ঘোড়ায় চড়তে দেখা যায় তাঁকে। ২০২২ সালেও সাদা ঘোড়ার পিঠে কিমের ঘুরে বেড়ানোর একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়। পুতিনও কম যান না। তাঁর ঘোড়ায় চড়ার ছবিও একবার প্রকাশ করেছিল রুশ গণমাধ্যম। এ ছাড়া বেশ কয়েকবার খালি গায়েও দেখা গেছে তাঁকে।
তবে পুতিন কিন্তু কিমের কাছ থেকে পুংসান কুকুর উপহার পাওয়া একমাত্র রাষ্ট্রপ্রধান নন। এর আগে ২০১৮ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইনকে একই প্রজাতির দুটি কুকুর দিয়েছিলেন কিম। ওই কুকুর দুটির নাম ছিল ‘গোমি’ ও ‘সংগ্যাং’।
source : প্রথম আলো
রাশিয়ার জব্দ সম্পদের আয় ইউক্রেনকে দেওয়া হলে প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি
***********************************************************************
রাশিয়ার যেসব সম্পদ জব্দ হয়েছে, সেগুলো থেকে আসা আয় পশ্চিমা দেশগুলো ব্যবহার করলে পাল্টা জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে মস্কো। রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেছেন, রাশিয়ার ভূখণ্ডে পশ্চিমা দেশগুলোর ‘উল্লেখযোগ্য পরিমাণ’ সম্পদ রয়েছে। প্রতিশোধ নিতে এই সম্পদগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করা হতে পারে।
গত সপ্তাহে ইতালিতে বিশ্বের উন্নত সাত দেশের সংগঠন জি-৭-এর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়, পশ্চিমা দেশগুলোর জব্দ করা রুশ সম্পদ থেকে যে সুদ আসছে, সেখান থেকে ইউক্রেনকে পাঁচ হাজার কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হবে। যদিও পশ্চিমাদের এমন সিদ্ধান্ত অবৈধ বলে উল্লেখ করেছে মস্কো।
গতকাল বুধবার মারিয়া জাখারোভা সাংবাদিকদের বলেন, রাশিয়ার আয়ত্তে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পশ্চিমা তহবিল ও সম্পদ রয়েছে। এগুলোর সবই প্রতিশোধ নেওয়ার কাজে ব্যবহার করা হতে পারে। জাখারোভা আরও বলেন, ‘প্রতিশোধ নিতে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হবে, অবশ্যই তা আপনার সামনে কেউ খোলাসা করবে না।’
দুই বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালাচ্ছে রাশিয়া। এর জেরে দেশটির প্রায় ২৮ হাজার ১০০ কোটি ডলারের সম্পদ জব্দ করে রেখেছে পশ্চিমারা।
অর্থনীতিবিদ, আইনজীবী ও বিশেষজ্ঞদের অনেকে বলছেন, এই সম্পদ থেকে আয় ইউক্রেনকে দেওয়া হলে রাশিয়ায় বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সম্পদগুলো জব্দ করতে পারে মস্কো।
source : প্রথম আলো
ডিএনএ নমুনা দিতে আনোয়ারুলের মেয়েকে ডেকেছে কলকাতার সিআইডি
***********************************************************************
ডিএনএ নমুনা দিতে সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীমের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌসকে ডেকেছে কলকাতার সিআইডি।
বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন আনোয়ারুলের ব্যক্তিগত সহকারী আবদুর রউফ। তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) একটি দলও মুমতারিনের সঙ্গে কলকাতায় যাবে। মুমতারিনের ভারতের ভিসা রয়েছে। পুলিশের ওই কর্মকর্তাদের জিও (সরকারি আদেশ) হলেই তাঁরা কলকাতায় যাবেন।
এদিকে ডিবির দায়িত্বশীল একটি সূত্র বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম আলোকে জানিয়েছে, মুমতারিন ডিএনএ নমুনা দিতে ভারতে যাবেন। কলকাতার সিআইডি বিষয়টি তাদের জানিয়েছে।
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম গত ১২ মে দর্শনা সীমান্ত হয়ে কলকাতায় যান। পরদিন ১৩ মে কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে খুন হন তিনি।
আনোয়ারুল আজীম খুন হওয়া ফ্ল্যাটের সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার হওয়া কয়েক টুকরা মাংস ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। এই টুকরাগুলো তাঁর লাশের খণ্ডিত অংশ কি না, তা নিশ্চিত হতে কলকাতায় যাচ্ছেন আনোয়ারুলের কন্যা মুমতারিন ফেরদৌস।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ ও ভারতে এখন পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাংলাদেশে গ্রেপ্তার পাঁচজনের মধ্যে চারজনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
source : প্রথম আলো
জামালপুরে কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করে দরপত্র ছিনতাইয়ের অভিযোগ
***********************************************************************
শেরপুর-জামালপুর বনগাঁও ব্রহ্মপুত্র সেতুর টোল আদায়ের ইজারার দরপত্র ছিনতাই করেছে একদল দুর্বৃত্ত। এ সময় এক কর্মকর্তাসহ দুজনকে লাঞ্ছিত করে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের জামালপুর কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
লাঞ্ছিত হওয়া ব্যক্তিরা হলেন সওজ জামালপুর কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী মোবারক হোসেন ও অফিস সহকারী লক্ষ্মী রানী। আজ ওই কার্যালয়ের তৃতীয় তলা থেকে মেসার্স অর্ণব ব্রিকস নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দরপত্র ছিনতাইয়ের এই ঘটনা ঘটে।
সওজ জামালপুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শেরপুর-জামালপুর বনগাঁও ব্রহ্মপুত্র সেতুর টোল আদায়ের ইজারার জন্য ১১ জুন দরপত্র আহ্বান করা হয়। গতকাল বুধবার দরপত্র বিক্রির শেষ সময় ছিল। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় ছিল।
সওজ বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী মোবারক হোসেন বলেন, ‘দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে একটি দরপত্র জমা হয়। বেলা সাড়ে ১২টার পর দরপত্রের বাক্স খুলে দরপত্রটি আমার রুমে নিয়ে আসা হয়। দরপত্রটি শেরপুর সার্কেল অফিসে পাঠানোর জন্য স্মারক নম্বর দেওয়াসহ দাপ্তরিক কাজ করার সময় ৬ থেকে ৭ জন দুর্বৃত্ত এসে আমাকে ধাক্কা দেয়। এ সময় তারা অফিস সহকারী লক্ষ্মী রানীসহ আমাকে লাঞ্ছিত করে দরপত্রটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তবে আমরা ওই সব দুর্বৃত্তদের চিনতে পারি নাই।’
মেসার্স অর্ণব ব্রিকসের প্রতিনিধি মো. মাসুদ রানা বলেন, ‘ আজকে দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল। দরপত্রের সব কাজ শেষে সিলগালা করে দরপত্রের বাক্সে জমা দেওয়া হয়। এ জায়গার যিনি দায়িত্বে রয়েছেন, তিনি দরপত্রটি খুলে শেরপুর পাঠানোর জন্য কাজ করছিলেন। এমন সময় কয়েকজন এসে দরপত্রটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।’
সড়ক ও জনপথ বিভাগের জামালপুর কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নওয়াজিস রহমান বলেন, ‘দুর্বৃত্তরা এসে অফিসের স্টাফদের লাঞ্ছিত করে দরপত্র ছিনতাই করেছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ মহব্বত কবীর বলেন, ‘বিষয়টি শোনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আমরা এখনো কোনো অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
source : প্রথম আলো
ডিমলায় বুড়ি তিস্তা নদীর বাঁধ ভেঙে ১০ গ্রাম প্লাবিত
***********************************************************************
ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার বুড়ি তিস্তা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে শতাধিক পরিবার। ডুবে গেছে আমনের বীজতলা।
স্থানীয় লোকজন জানান, ভোরে উপজেলার বালাপাড়া ইউনিয়নের সুন্দরখাতা গ্রামে বুড়ি তিস্তা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ মূল বাঁধের প্রায় ২০০ মিটার অংশ ভেঙে যায়। বাঁধটির ভাঙা অংশ দিয়ে সুন্দরখাতা, মধ্য সুন্দরখাতা, রূপাহারা, সিংপাড়া, মাইঝালির ডাঙাসহ প্রায় ১০টি গ্রামে বুড়ি তিস্তা নদীর পানি প্রবেশ করে। এতে পানিতে তলিয়ে যায় এসব গ্রামের বেশ কিছু জমির আমন ধানের বীজতলা।
সুন্দরখাতা গ্রামের বাসিন্দা মো. হাবিবুর রহমান (৫০) জানান, ষাটের দশকে বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। এত দিন বাঁধটি মজবুত থাকার কথা নয়। এর আগেও বাঁধটি ভেঙে প্রায় ২০ বছর অনাবাদী ছিল এসব গ্রামের প্রায় এক হাজার একর জমি। অথচ টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের। তিনি আরও বলেন ‘এবার বাঁধ ভেঙে গ্রামের অন্তত ৫০ জন কৃষকের আমন ধানের বীজতলা তলিয়ে গেছে।’
একই গ্রামের বাসিন্দা আবদুল মজিদ বলেন, ‘ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢল নেমে আসায় বাঁধটি ভেঙে গেছে। ভেঙে যাওয়া জায়গাটি দিয়ে প্রবল বেগে গ্রামে পানি ঢুকছে। বাড়িঘরে পানি উঠে যাওয়ায় আমরা আমাদের কাপড়চোপড় ও ঘরে থাকা মালামাল খাটের ওপর রেখেছি।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সেকেন্দার আলী বলেন, ‘বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ওই এলাকার অন্তত এক হাজার বিঘা আবাদি জমি সাময়িক পতিত হয়ে পড়বে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাঁধ ভেঙে যাওয়ার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। বাঁধটি অনেক পুরোনো, ৪০ থেকে ৪৫ বছর আগের। এটি আমাদের আওতায় কি না, এ বিষয়ে সন্দেহ আছে। এখন পানি না কমা পর্যন্ত সেখানে মালামাল নিয়ে কাজ করা সম্ভব নয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলে বাঁধ সংস্কারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আতিকুর রহমান আরও বলেন, ‘বাঁধের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। এতে বাঁধটি বিধ্বস্ত হয়ে প্রায় ৩০০ একর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব জমিতে এখন তেমন কোনো ফসল নেই। কিছু জমিতে আমন ধানের বীজতলা রয়েছে।’
source : প্রথম আলো