ইবলিস, প্রথম বর্ণবাদী। ইবলিস বলেছিল, “আমি আদম থেকে শ্রেষ্ঠ।” কেন? ঈমানের জন্য না, তাকওয়ার জন্য না। বরঞ্চ ইবলিস আল্লাহকে বলল, আপনি আমাকে যা দিয়ে বানিয়েছেন, আদমকে তা দিয়ে সৃষ্টি করেননি। এজন্য আমি শ্রেষ্ঠ।
সে এমন যুক্তির অবতারণা করল যা আসলে সত্যিকারের শ্রেষ্ঠ ও মহীয়ান হওয়ার মানদণ্ডে টিকেনা। সে অকার্যকর এক যুক্তি দিল। তার উৎস, তাকে যেখান থেকে বানানো হয়েছে, সে যুক্তি।
কোথা থেকে এসেছে, গায়ের রঙ কি— এসবের মাধ্যমেই বর্ণবাদ শুরু হয়। ইবলিস ঠিক এরকম কিছুরই উল্লেখ করে বলল, আমি আদম আ. থেকে শ্রেষ্ঠ। ফলে সে প্রথম বর্ণবাদীতে পরিণত হল।
নিজেকে অন্যদের থেকে শ্রেষ্ঠ মনে করার কারণ যদি এমন কিছু হয়, যা আসলে মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে— সেগুলো নিয়ে অহংকার করা যাবেনা। যেমন— কারো দেশ, উন্নত পাসপোর্ট, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থান, গায়ের রঙ ইত্যাদি। এগুলো মহান আল্লাহর কাছে আদৌ বিবেচ্য নয়। এসবের জন্য কেউ অহংকার করলে সে মূলতঃ ইবলিসের পথই অনুসরণ করে।
এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে রাখা দরকার। তা হল, এমনকি আমাদের তাকওয়া ও ধার্মিকতা নিয়েও অহংকার করা যাবেনা। কারণ, ধার্মিকতার চিহ্ন দেখে বুঝা যায়না কে বেশি তাকওয়াবান। ফলে আমাদের অন্যদের থেকে বেশি তাকওয়া ও ধার্মিকতা আছে বলে মনে হলেও আল্লাহর নির্দেশনা হল, আমরা ভাববো না যে, অন্যের তুলনায় আমি বড় ধার্মিক। ধার্মিকতা এমনই— একমাত্র আল্লাহই জানেন কে বেশি ধার্মিক।
সুতরাং, ইবলিস হল সর্বপ্রথম বর্ণবাদী কেননা সে বলেছিল, আমি আদম থেকে শ্রেষ্ঠ। আমাকে বানিয়েছেন আগুন থেকে, আর তাকে মাটি থেকে। এজন্যই আমি শ্রেষ্ঠ।
মূল: দ্য ম্যাসেজ অফ দ্য কুরআন
© মো. খালিদ সাইফুল্লাহ