শাহ আব্দুল হান্নান। বাংলাদেশী ইসলামী দার্শনিক, শিক্ষাবিদ, লেখক, অর্থনীতিববিদ ও সমাজ সেবক। তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ছিলেন। এছাড়াও তিনি দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চ্যান্সেলর ছিলেন। ছিলেন ইসলামী ব্যাংকের পরিচালকও। আজ ২ জুন, ২০২১, বুধবারে মহান রবের ডাকে সাড়া দিয়ে চলে গেলেন তিনি।
শাহ আব্দুল হান্নান ১৯৩৯ সালের ১লা জানুয়ারি কটিয়াদী থানা কিশোরগঞ্জ জেলা বৃহত্তর ময়মনসিংহে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক এবং ১৯৬১ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
হান্নান তার কর্মজীবন শিক্ষকতার পেশা দিয়ে শুরু করেন। তিনি ১৯৬২ সালে ঢাকা কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক হিসাবে যোগ দেন। ১৯৬৩ সালে তিনি পাকিস্তান ফিন্যান্স সার্ভিসে যোগ দেন। এবং ১৯৯৮ সালে সর্বশেষ বাংলাদেশ সরকারের সচিব পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেছিলেন। এর মাঝে তিনি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, যেখানে তিনি ভ্যাট চালুর অন্যতম প্রবক্তা ছিলেন। ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর, দুর্নীতি দমন ব্যুরোর মহাপরিচালক, সমাজ কল্যাণ ও সর্বশেষ অর্থ মন্ত্রণালয়ের আভ্যন্তরীন সম্পদ বিভাগের সচিব।
শাহ আব্দুল হান্নান ইসলামী অর্থনীতি ও সমাজ ব্যবস্থা সম্পর্কে বেশ কিছু বই লিখেছেন। সেগুলোর অন্যতম হল-
• ইসলামী অর্থনীতিতে সরকারের ভূমিকা
• ইসলামী অর্থনীতিঃ দর্শন ও কর্মকৌশল
• নারী সমস্যা ও ইসলাম
• নারী ও বাস্তবতা
• সোস্যাল ল অব ইসলাম
• দেশ সমাজ ও রাজনীতি
• বিশ্ব চিন্তা
• সোভিয়েত ইউনিয়নে ইসলাম
• উসুল আল ফিকহ
• ল ইকনোমিক অ্যান্ড হিস্টোরি
বাংলাদেশের জন্য তার অবদান অনেক। এগুলো নিয়ে লেখালেখি হওয়া উচিত ব্যাপক পরিসরে। তার প্রতিষ্ঠিত স্বপ্নের প্রতিষ্ঠানগুলো একের পর এক বেদখল হয়েছে। তার স্বপ্নকে চুরমার করা হয়েছে। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে দারুল ইহসান, ইসলামী ব্যাংক— সব দখল করেছে ওরা।
দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তেও তার পদক্ষেপ ছিল। দেশে কর ব্যবস্থা প্রবর্তন তার হাতেই হয়েছিল। বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে যা কয়েক পদক্ষেপ এগিয়ে দেয়।
বিভিন্ন টকশোতে তিনি ছিলেন ইসলামপন্থীদের পক্ষের কন্ঠস্বর। শাহরিয়ার কবিরদের নাকানি চুবানি খাইয়েছেন বিভিন্ন টকশোতে।
মহান এই ব্যক্তির জীবন অধ্যয়ন করা, রিসার্চ করা তরুণ প্রজন্মের দায়িত্বের অংশ। আশা করি, বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম তাকে নিয়ে জানবে, বুঝবে। তাকে নিয়ে লিখবে, তার স্বপ্ন, আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা— কি ছিল, কিসের পেছনে ছুটে তিনি দেশকে, মুসলিমদের এত কিছু দিলেন, সেক্যুলার বুদ্ধিজীবী না হয়ে হলেন বাংলাদেশে ইসলামপন্থার গুরুত্বপূর্ণ তাত্ত্বিক! এসব নিয়ে জানতে হবে।
আল্লাহ শাহ আব্দুল হান্নানের ভুলত্রুটি ক্ষমা করুন। তাকে আসমানে ও যমীনে সম্মানিত করুন। কবর, হাশর, মীযান, পুলসিরাতসহ আখিরাতের প্রতিটি ধাপে আল্লাহ তাকে সাহায্য করুন। সম্মানিত করুন। আমীন।

Saiful Islam
댓글 삭제
이 댓글을 삭제하시겠습니까?
James Boss
댓글 삭제
이 댓글을 삭제하시겠습니까?