১৯৯৯ সালে আর্জেন্টিনার মাউন্ট লুল্লাইলাকোর ২২,০০০ ফুট উঁচু চূড়া থেকে আবিষ্কৃত হয় এই ১৫ বছর বয়সী ইনকা মেয়েটির মমি। ৫০০ বছর ধরে বরফের নিচে হিমায়িত অবস্থায় থাকার পরও এর সংরক্ষণ অবস্থা এতটাই অসাধারণ যে, এটি এখন পর্যন্ত পাওয়া সেরা সংরক্ষিত মমিগুলির মধ্যে অন্যতম।
ভাবতে অবাক লাগে, এর অভ্যন্তরীণ অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছিল অক্ষত, হৃদপিণ্ড ও ফুসফুসে রক্ত তখনও বিদ্যমান ছিল, এমনকি ত্বক ও মুখের বৈশিষ্ট্যও প্রায় অবিকৃত ছিল! বিজ্ঞানীরা সিটি স্ক্যান ও অন্যান্য আধুনিক পদ্ধতির সাহায্যে এর মস্তিষ্ক, ফুসফুস, হৃদপিণ্ড, যকৃত, কিডনি এবং অগ্ন্যাশয় স্পষ্টভাবে দেখতে পেয়েছেন।
এই মেয়েটি, যার নাম দেওয়া হয়েছিল “লা ডনসেলা” (The Maiden), ইনকাদের ‘ক্যাপাকোচা’ নামক এক ধর্মীয় আচারের অংশ হিসেবে ব"লি হয়েছিল। ইনকারা বিশ্বাস করত, পর্বত দেবতাকে সন্তুষ্ট করতে এবং সম্রাটের মঙ্গল নিশ্চিত করতে এই ধরনের ব"লি"দান প্রয়োজন ছিল। ব"লিদা"নের আগে শিশুদের কো"কা পাতা এবং অ্যা"লকোহ"ল দিয়ে মাদকাসক্ত করা হতো, তারপর তাদের মাটির নিচে একটি ছোট চেম্বারে রেখে দেওয়া হতো, যেখানে তারা ঠান্ডায় জমে "*মা"রা যেত।
গবেষণায় দেখা গেছে, ব"লি"দানের কয়েক মাস আগে থেকে তাদের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা হয়েছিল, যেখানে ভুট্টা ও লামার মাংসের মতো অভিজাত খাবার যোগ করা হতো। লা ডনসেলার চুলের রাসায়নিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মৃ"ত্যু"র মাসখানেক আগে থেকে তার কোকা ও অ্যা"ল"কোহ"ল সেবনের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গিয়েছিল।
এই মমিগুলো কেবল প্রাচীন ইনকা সভ্যতার জীবনযাত্রাই নয়, বরং প্রাকৃতিক হিমায়নের মাধ্যমে মানবদেহ কীভাবে শত শত বছর ধরে সংরক্ষিত থাকতে পারে, তারও এক অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বর্তমানে, এই মমিগুলো সাল্টার ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিশেষ ল্যাবরেটরিতে সংরক্ষিত আছে।
