১৮৪৫ সাল। দুটি ব্রিটিশ জাহাজ, এইচএমএস ইরেবাস এবং এইচএমএস টেরর, ১২৯ জন নাবিককে নিয়ে দুর্গম উত্তর-পশ্চিম পথ (Northwest Passage) খুঁজে বের করতে যাত্রা শুরু করে। কিন্তু এই গর্বিত অভিযানটি রহস্যজনকভাবে আর্কটিকের বরফে হারিয়ে যায়।
প্রায় ১৪০ বছর পর, ১৯৮৪ সালে কানাডার বিচি দ্বীপে জন টরিংটন নামে এক নাবিকের হিমায়িত দেহ খুঁজে পাওয়া যায়। তীব্র ঠান্ডার কারণে তার দেহ প্রায় অবিকৃত ছিল। ফরেনসিক পরীক্ষায় তার দেহে সীসার উচ্চ মাত্রা পাওয়া যায়, যা থেকে গবেষকরা ধারণা করেন, টিনজাত খাবার থেকে সীসা বিষক্রিয়াই অভিযানের ব্যর্থতার মূল কারণ।
কিন্তু সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা এই ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। ২০১৮ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় সিনক্রোট্রন প্রযুক্তি ব্যবহার করে নাবিকদের হাড় বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তাদের দেহে সীসার মাত্রা তৎকালীন অন্যান্য ব্রিটিশ নাবিকদের তুলনায় অস্বাভাবিক ছিল না। বিজ্ঞানীরা এখন মনে করেন, জাহাজের পানীয় জলের পাইপ থেকেই সীসা দূষিত হয়েছিল, যা হয়তো কিছু নাবিককে দুর্বল করে দিয়েছিল, কিন্তু অভিযানের মূল কারণ ছিল না।
আসল সত্য ছিল আরও ভয়াবহ: নাবিকদের মৃত্যু হয়েছিল অপুষ্টি, ঠাণ্ডা, স্কার্ভি ও নিউমোনিয়ার মতো রোগের সম্মিলিত প্রভাবে । সবচেয়ে ভয়ংকর প্রমাণ পাওয়া গেছে ক্যাপ্টেন জেমস ফিটজজেমস-এর চোয়ালের হাড়ে। ফরেনসিক বিশ্লেষণ থেকে জানা যায়, চরম ক্ষুধার তাড়নায় নাবিকেরা নিজেদের/ মৃ/ত স/ঙ্গী/র মাং/স খেতে বাধ্য হয়েছিল। তার হাড়ে ধারালো অস্ত্রের কাটা দাগ পাওয়া গেছে, যা
নর মাংস সংরক্ষণের (can/niba*/lism) স্পষ্ট প্রমাণ ।
এই শতাব্দি পুরোনো রহস্যের সমাধান ঘটেছে সম্প্রতি। ইনুইট সম্প্রদায়ের লোকমুখে প্রচলিত তথ্যের সাহায্য নিয়ে ২০১৪ ও ২০১৬ সালে এইচএমএস ইরেবাস এবং এইচএমএস টেরর জাহাজ দুটি খুঁজে পাওয়া যায়।