কখনো ভেবে দেখেছেন, বেঁচে থাকার ইচ্ছা কতটা শক্তিশালী হতে পারে? আপনার কল্পনাকেও হার মানাবে প্রকৃতির এই অবিশ্বাস্য ঘটনা।
ছবিতে যা দেখছেন, এটি একটি প্রাণীর পাঁজরের হাড়, যার ভেতর দিয়ে গেঁথে আছে একটি “ধারালো বর্শা বা হারপুন”। এমন মারাত্মক আঘাত পাওয়ার পর মৃত্যু যেখানে ছিল প্রায় নিশ্চিত, সেখানে শরীর শুরু করে দিলো এক অবাক করা লড়াই।
কিন্তু শরীর এই বহিরাগত বস্তুটিকে প্রত্যাখ্যান করলো না। বরং, ঘটলো ঠিক তার উল্টোটা! 😲
যখন কোনো বাহ্যিক বস্তু (foreign object) শরীরে প্রবেশ করে এবং দ্রুত কোনো মারাত্মক ইনফেকশন বা অঙ্গহানি না ঘটায়, তখন শরীর এক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলে।
১. শরীর বুঝতে পারে যে বস্তুটি সরানো সম্ভব নয়। তখন সেটিকে শত্রু হিসেবে না দেখে, বরং তাকে "বন্দী" করার পরিকল্পনা করে।
২. আমাদের হাড়ের মধ্যে থাকা “অস্টিওব্লাস্ট” (Osteoblast) নামক কোষগুলো সক্রিয় হয়ে ওঠে। এই কোষগুলোর কাজ হলো নতুন হাড় তৈরি করা। তারা ধীরে ধীরে ঐ ধারালো বস্তুর চারপাশে নতুন হাড়ের স্তর তৈরি করতে শুরু করে।
৩. বছরের পর বছর ধরে, হাড়ের এই বৃদ্ধি চলতে থাকে এবং একসময় বস্তুটি পুরোপুরি নতুন হাড়ের আবরণে ঢেকে যায়। এটি তখন শরীরেরই একটি অংশ হয়ে ওঠে, ঠিক যেন এটি সবসময় সেখানেই ছিল!
এই ঘটনাটি তিমি শিকারের ইতিহাসে বহুবার দেখা গেছে। শিকারিদের হারপুন গায়ে নিয়ে তিমিরা বহু দশক বেঁচে থেকেছে এবং পরে তাদের কঙ্কালে দেখা গেছে হারপুনটি হাড়ের সাথে একেবারে মিশে গেছে।
এটি প্রমাণ করে যে, শরীর এবং মনের বেঁচে থাকার ইচ্ছা কতটা অদম্য হতে পারে। নিরাময় মানে সবসময় কষ্ট বা ক্ষতকে উপড়ে ফেলা নয়; কখনো কখনো সেই কষ্টের সাথেই নিজেকে মানিয়ে নিয়ে, তাকে ঘিরে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠাটাই আসল বেঁচে থাকা। 💪❤️
প্রকৃতির নিজেরও নিরাময়ের পদ্ধতি আছে, যা অনেক সময় আমাদের জ্ঞান এবং চিকিৎসাবিজ্ঞানের সীমানাকেও ছাড়িয়ে যায়।