তুমি যদি কোনদিন অন্যের রানী সাজো।সেদিন বিচিত্র রূপে তোমার মুখ খানা সজ্জিত হবে।মনের ভাব নাকি মুখে প্রকাশ হয়না।
কিন্তু তোমার মুখের মেক আপের কারনে সেদিন সত্যিকার কোন ভাষা প্রকাশ হবে না।
তবে আমি সেদিন ঠিকই বুঝতে পারবো,তূমি আর আমার নেই।
তুমি তখন কারো মনের রানী হবার জন্য প্রতিক্ষায় থাকবে বিয়ের মনেও।
তোমার বিয়ের সানাই সূরটা আমার কাছে বিষাদের মনে হবে।
বিদায় কথাটি খুবই মর্মান্তিক সন্দেহ নেই।
তূমি আমাকে ছেড়ে গেলেও,আমি তোমার প্রেমের স্মৃতি কখনই ভুলবো না।
তোমার এই বিদায়ে-আমার অন্তরের সমস্ত বেদনা অশ্রু ঝরবে।
তখন হৃদয় বিনায় বারবার ঝংকৃত হবে
তুমি বড় নির্দয়,
তুমি বড় পাষাণী।
।।।।।।।।।।।।।আনিছ ।।।।।।।।।।।।।।।
প্রশ্নঃ কখন রোগীর জন্য নামায বসে পড়া জায়েয। কেননা হতে পারে তিনি দাঁড়ানোর ধকল নিতে পারেন; কিন্তু তীব্র কষ্ট হয়।
উত্তরঃ ইমাম নববী ‘আল-মাজমু’ গ্রন্থে (৪/২০১) বলেন:
“উম্মাহ এই মর্মে ইজমা করেছে— যে ব্যক্তি ফরয নামাযে দাঁড়াতে অক্ষম সে বসে নামায পড়বে; তাকে নামায পুনরাবৃত্তি করতে হবে না। আমাদের মাযহাবের আলেমগণ বলেন: দাঁড়িয়ে নামায পড়ার সওয়াব থেকে তার সওয়াব কম হবে না। কেননা সেই ব্যক্তি ওজরগ্রস্ত। সহিহ বুখারীতে সাব্যস্ত হয়েছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “যদি কোন বান্দা অসুস্থ হয় কিংবা সফরে থাকে সে সুস্থ ও মুকীম অবস্থায় যে আমল করত তার জন্য তাই লেখা হবে।”[সমাপ্ত]
দাঁড়ানো মওকুফ হওয়া ও বসে ফরয নামায আদায় করা সংক্রান্ত ওজরের মূলনীতি:
১। দাঁড়াতে অক্ষম হওয়া।
২। রোগ বেড়ে যাওয়া।
৩। আরোগ্য লাভ বিলম্বিত হওয়া।
৪। এত তীব্র কষ্ট হওয়া যে, নামাযের খুশু নষ্ট করে দেয়; যদি এর চেয়ে কম কষ্ট হয় তাহলে বসে নামায পড়া জায়েয হবে না।
ইমরান বিন হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন: “আমার অর্শ রোগ ছিল। সে প্রসঙ্গে আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নামাযের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বললেন: তুমি দাঁড়িয়ে নামায পড়বে; যদি দাঁড়াতে না পার তাহলে বসে পড়বে। যদি বসতে না পার তাহলে কাত হয়ে শুয়ে নামায পড়বে।”[সহিহ বুখারী (১১১৭)]
হাফেয ইবনে হাজার বলেন:
“হাদিসের ভাষ্য: ‘যদি দাঁড়াতে না পার’ –এর মাধ্যমে ঐ সকল আলেম দলিল দেন যারা বলেন যে, দাঁড়াতে অক্ষম না হলে বসা যাবে না। কাযী ইয়ায এটি ইমাম শাফেয়ি থেকে বর্ণনা করেছেন। ইমাম মালেক, আহমাদ ও ইসহাক্ব থেকে বর্ণিত আছে যে, সক্ষমতা শূণ্য হওয়া শর্ত নয়; বরং কষ্ট পাওয়াই যথেষ্ট। শাফেয়ি মাযহাবের সুবিদিত অভিমত হলো: সক্ষমতা না থাকা দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে— দাঁড়াতে তীব্র কষ্ট হওয়া কিংবা রোগ বেড়ে যাওয়া কিংবা মৃত্যুর আশংকা করা; কিঞ্চিৎ কষ্ট হওয়া যথেষ্ট নয়। তীব্র কষ্টের মধ্যে পড়বে: জাহাজে আরোহী দাঁড়িয়ে নামায পড়লে মাথা ঘুরানো এবং ডুবে যাওয়ার আশংকা করা।
জমহুরের অভিমতের পক্ষে প্রমাণ করে ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর হাদিস যা তাবারানী সংকলন করেছেন: “সে দাঁড়িয়ে নামায পড়বে। যদি তাতে কষ্ট হয় তাহলে বসে পড়বে। যদি তাতে কষ্ট হয় তাহলে শুয়ে পড়বে।”[ফাতহুল বারী থেকে সমাপ্ত]
ইবনে আব্বাসের যে হাদিসটি ইবনে হাজার উল্লেখ করেছেন সেটি আল-হাইছামী তাঁর ‘মাজমাউয যাওয়ায়েদ’ গ্রন্থে (২৮৯৭) উল্লেখ করে বলেন: ‘হাদিসটি তাবারানী ‘আল-আওসাত’ গ্রন্থে বর্ণনা করে বলেছেন: ইবনে জুরাইজ থেকে হাদিসটি হালস বিন মুহাম্মদ আদ-দাবাঈ ছাড়া আর কেউ বর্ণনা করেনি। আমি (হাইছামী) বললাম: কেউ তার পরিচয় লিখেছেন মর্মে আমি পাইনি। অন্য বর্ণনাকারীগণ ছিকাহ (নির্ভরযোগ্য)।[সমাপ্ত]
ইবনে কুদামা ‘আল-মুগনী’ (১/৪৪৩) বলেন:
“যদি তার পক্ষে দাঁড়ানো সম্ভবপর হয়; কিন্তু সে রোগ বেড়ে যাওয়া, কিংবা সুস্থতা বিলম্বিত হওয়া কিংবা তীব্র কষ্ট হওয়ার আশংকা করে— তাহলে সে ব্যক্তি বসে নামায পড়বে। এমন কথা ইমাম মালেক ও ইসহাক্ব বলেছেন; আল্লাহ্ তাআলার বাণী: “তিনি দীনের ক্ষেত্রে তোমাদের উপর কোনো কষ্ট আরোপ করেনি”।[সূরা হাজ্জ, আয়াত: ৭৮]-এর প্রেক্ষিতে। আর এই অবস্থায় দাঁড়িয়ে নামায পড়ার দায়িত্বারোপের মধ্যে কষ্ট রয়েছে। কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ডান পার্শ্ব যখন জখম হয়েছিল তখন তিনি বসে নামায পড়েছিলেন। বাহ্যতঃ বুঝা যায়, তিনি বিলকুল দাঁড়াতে সক্ষম ছিলেন না; এমনটি নয়। কিন্তু দাঁড়াতে তাঁর কষ্ট হচ্ছিল। তাই দাঁড়ানো তাঁর থেকে মওকুফ হয়েছে।”[সমাপ্ত]
ইমাম নববী ‘আল-মাজমু’-তে (৪/২০১) বলেন:
“আমাদের মাযহাবের আলেমগণ বলেন: অক্ষমতার ক্ষেত্রে দাঁড়াতে না-পারা শর্ত নয় এবং কিঞ্চিৎকর কষ্ট হওয়াও যথেষ্ট নয়। বরং ধর্তব্য হলো স্পষ্ট কষ্ট। যদি কেউ তীব্র কষ্ট কিংবা রোগবৃদ্ধি কিংবা এ ধরণের কিছুর ভয় করে কিংবা জাহাজের আরোহী পানিতে পড়ে যাওয়া কিংবা মাথা ঘুরানোর আশংকা করে— তাহলে বসে নামায পড়বে এবং নামাযটি পুনরায় পড়তে হবে না। ইমামুল হারামাইন বলেন: অক্ষমতাকে বিধিবদ্ধ করার ক্ষেত্রে আমার মত হলো: দাঁড়ানোর প্রেক্ষিতে এমন কষ্ট হওয়া যা নামাযের খুশু (মনোযোগ) নষ্ট করে দেয়। কেননা খুশু নামাযের মূল উদ্দেশ্য।”[সমাপ্ত]
ইমামুল হারামাইন যা নির্বাচন করেছেন শাইখ উছাইমীন সেটাকেই প্রাধান্য দিয়েছেন। তিনি বলেন: কষ্টের বিধি হলো— যার মাধ্যমে খুশু নষ্ট হয়। খুশু হচ্ছে অন্তরের উপস্থিতি ও স্থিতিশীলতা। যদি দাঁড়ালে তীব্র আতঙ্কে থাকে, মন স্থিতিশীল না হয় এবং তীব্র কষ্টের কারণে কামনা করে যে, সূরা ফাতিহার শেষ পর্যন্ত পৌঁছলে রুকু করে ফেলবে: তাহলে এই ব্যক্তির জন্য দাঁড়ানোটা কষ্টকর। তিনি বসে নামায পড়বেন।”[আল-শারহুল মুমতি (৪/৩২৬) থেকে]
#islamicproshno
#islamicquestion
#kachermasjid
#bdmasjid
#mosqueinbangladesh
#proshno
প্রশ্ন: মদকে চারটি ধাপে হারাম করা হয়েছে
আল্লাহ তাআলা মাদককে চারটি পর্যায়ে হারাম করেছেন। প্রথম পর্যায়: আল্লাহ তাআলা কুরআনের আয়াত নাজিলের মাধ্যমে ঘোষণা দিলেন যে, তোমরা খেজুর ও আঙ্গুর দ্বারা মাদক তৈরির পাশাপাশি উত্তম খাদ্য বস্তুও তৈরি করে থাক। যেমন পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,
وَمِنْ ثَمَرَاتِ النَّخِيلِ وَالْأَعْنَابِ تَتَّخِذُونَ مِنْهُ سَكَرًا وَرِزْقًا حَسَنًا
‘আর খেজুর গাছের ফল ও আঙ্গুর হতে তোমরা মাদক ও উত্তম খাদ্য গ্রহণ করে থাক।’ [সূরা নাহল, আয়াত: ৬৭]
এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা সরাসরি মাদক হারাম করেননি, তবে জানিয়ে দিলেন, মাদক ভিন্ন জিনিস। আর উত্তম খাদ্যবস্তু ভিন্ন জিনিস। এই আয়াত নাজিল হওয়ার পর সাহাবায়ে কেরাম ধারণা করে নিলেন যে, মাদক সম্পর্কে কোনো বিধান আল্লাহ তাআলা অচিরেই নাজিল করবেন।
দ্বিতীয় পর্যায়: এরপর সাহাবায়ে কেরাম যখন মাদক সম্পর্কে রাসূল (সা.) কে জিজ্ঞাসা করেন তখন আল্লাহ তাআলা কুরআনের আয়াত নাজিলের মাধ্যমে তাঁর প্রিয় হাবীবকে জানিয়ে দিলেন যে, মদের মাঝে উপকার ক্ষতি উভয়ই রয়েছে। তবে উপকারের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণটা বেশি। কুরআনে এসেছে,
يَسْأَلُونَكَ عَنِ الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ قُلْ فِيهِمَا إِثْمٌ كَبِيرٌ وَمَنَافِعُ لِلنَّاسِ وَإِثْمُهُمَا أَكْبَرُ مِنْ نَفْعِهِمَا
‘তারা তোমাকে মদ ও জুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। বল, এ দু’টোয় রয়েছে বড় পাপ ও মানুষের জন্য উপকার। আর তার পাপ তার উপকারিতার চেয়ে অধিক বড়।’ [সূরা বাকারা, আয়াত: ২১৯]
এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা সাহাবায়ে কেরামের অন্তরে মাদকের প্রতি কিছুটা ঘৃণার সৃষ্টি করে দিলেন। ফলে সাহাবায়ে কেরাম দু’দলে ভাগ হয়ে গেলেন। একদল ক্ষতির দিক বিবেচনায় তা বর্জন করলেন। আরেকদল চিন্তা করলেন, যেহেতু কিছুটা উপকার রয়েছে তাই তা গ্রহণে কোনো সমস্যা হবে না।
তৃতীয় পর্যায়: এ পর্যায়ে আল্লাহ তাআলা আয়াত নাজিল করে জানিয়ে দিলেন, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নামাজের কাছেও যাওয়া যাবে না। যেমনটি ইরশাদ হয়েছে,
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَقْرَبُوا الصَّلَاةَ وَأَنْتُمْ سُكَارَى
‘হে মুমিনগণ, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় তোমরা নামাজের নিকটবর্তী হয়ো না।’ [সূরা নিসা, আয়াত: ৪৩]
এই আয়াত নাজিলের পর আরো কিছু সাহাবী মদকে বর্জন করলেন। তবে মদ সরাসরি হারাম না করার কারণে অল্প কিছু সংখ্যক সাহাবী তখনো নামাজের সময় ছাড়া অন্য সময় মদ পান করতেন।
চতুর্থ পর্যায়: পরিশেষে আল্লাহ তাআলা কুরআনের আয়াত নাজিলের মাধ্যমে মদকে চূড়ান্তভাবে হারাম করে দিলেন। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالْأَنْصَابُ وَالْأَزْلَامُ رِجْسٌ مِنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
‘হে মুমিনগণ, নিশ্চয় মদ, জুয়া, প্রতিমা-বেদী ও ভাগ্যনির্ধারক তীরসমূহ তো নাপাক শয়তানের কর্ম। সুতরাং তোমরা তা পরিহার কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ [সূরা মায়েদা, আয়াত: ৯০]
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم
ড. মুফতি মুহাম্মাদ খলিলুর রহমান মাদানী
#islamicproshno
#islamicquestion
#kachermasjid
#bdmasjid
#mosqueinbangladesh
#proshno