আজ থেকে প্রায় দেড় বছর আগে তাহাজ্জুদ নিয়ে দুইটা লেকচার শুনেছিলাম। লেকচার থেকে দুইটা ব্যাপার শুনে আমি এত বেশি শকড হয়েছিলাম যা আগে কখনো হইনি-
১. তাহাজ্জুদ একটা সম্মান যা গুনাহগারদের আল্লাহ দেন না।
২. আল্লাহ কার প্রতি কতটা সন্তুষ্ট তা বুঝতে হলে দেখুন কে কতটুকু তাহাজ্জুদ নিয়ে সিরিয়াস। ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল(রহি) বলেছেন- 'যে তাহাজ্জুদ পড়েনা আমি তাকে ধার্মিকতার কাতারেই ফেলিনা।'
সেদিনের পর থেকে নিজের উপর এক্সপেরিমেন্ট চালানো শুরু করলাম। টানা প্রায় দেড় বছর সেই এক্সপেরিমেন্ট চালানোর পর আমি একটা সুত্র আবিস্কার করেছি।
আবিস্কার বললে ভুল হবে, অনুধাবন বলা যায়। সুত্রটা হল-
>>⏳যথাযথভাবে তাহাজ্জুদ পড়তে পারার হার হৃদয়ের কাঠিন্যের ব্যাস্তানুপাতিক।
ব্যাখ্যাঃ তাহাজ্জুদ পড়তে পারবো কি না এইটা আমি ঘুমাবার সময়ই এখন বুঝতে পারি নিজের হৃদয়ের অবস্থা দেখে।
দিনের বেলায় করা প্রতিটা কাজকর্মই ডিফাইন করবে আপনি রাতে তাহাজ্জুদ পড়তে পারবেন কি না। আবার পারলেও কতটুকু আন্তরিকতা আসবে সেটাও বুঝতে পারবেন।
আপনার হৃদয় যত বেশি নম্র হবে তাহাজ্জুদে তত বেশি হৃদয় পরিতুষ্ট হবে,চোখে পানি আসবে।
আর কার অন্তর কত বেশি নম্র তা নির্ভর করে কে কতবেশি তাকওয়াবান।
যত বেশি আল্লাহর আনুগত্য করবেন,গুনাহ থেকে বেচে থাকবেন- তত বেশি অন্তরটা নরম হবে। অন্যদিকে যত বেশি বেহুদা কাজকর্ম গুনাহ ইত্যাদি অবাধ্যতায় লিপ্ত থাকবেন,ইবাদত থেকে বিমুখ থাকবেন তত বেশি অন্তর কঠিন হবে।
আর সেই কঠিন অন্তর নিয়ে রাতে উঠতে পারবেন না। উঠতে পারলেও সালাতে দাড়াতে পারবেন না। সালাতে দাড়াতে পারলেও চোখ দিয়ে পানি আসবেনা। আমার অভিজ্ঞতা থেকে এমনও দেখেছি-
❎ রাত ৯টায় ঘুমিয়েছি, এলার্ম দিয়েছি ৫-৬ টা। কোনভাবেই চান্স নাই মিস হওয়ার। তারপরেও পারিনি নামাজে দাড়াতে। এমনকি জাগনা পেয়েও পড়তে পারিনি। কখনো আবার পড়তে পারলেও আলসেমি, কোন ফিলিংস নাই, চোখে পানি নাই...কারন একটাই- কঠিন হৃদয়।
✅ আবার এমনো হয়েছে যে প্রচন্ড হার কাপানো শীতে ঠান্ডা পানি দিয়ে ওজু করে নামাজে দাড়িয়েছি- চোখ দিয়ে গড়গড় করে পানি পড়ছে। কি এক প্রশান্তি যা বলার বাহিরে। কারন একটাই- নরম হৃদয়।
আফসোসের বিষয় এরকম রাত পেয়েছি বিগত এক বছরে হাতে গনা কয়েকটা। বেশিরভাগ রাত কাটে এমন যে ফজরে জাগ্না পেয়ে তাহাজ্জুদ না পড়ার আফসোস করতে হয়।
উপসংহারঃ আমি যে কতটা নিকৃষ্ট আল্লাহর গোলাম তা তাহাজ্জুদ পড়ার চেষ্টা না করলে বুঝতেই পারতাম না। এইটা অনেকটা লিটমাস টেস্টের মত।
আপনিও যাচাই করে দেখতে পারেন- আল্লাহ আপনার প্রতি কতটা সন্তুষ্ট।
মনে রাখবেন- কেবল ঘুমের প্যাটার্ন দিয়ে তাহাজ্জুদ হয়না- তাহাজ্জুদ হয় আপনার দিনের কাজকর্ম দিয়ে। দিনটা যত গুনাহমুক্ত থাকবেন,রাতে তত নরম হৃদয়ে আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে পারবেন।
(সংগৃহীত)
https://banglajogot.com/%e0%a6....%b9%e0%a6%be%e0%a6%b
https://banglajogot.com/%e0%a6....%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b
https://banglajogot.com/%e0%a6....%a6%e0%a7%80%e0%a6%b
https://banglajogot.com/%e0%a6....%aa%e0%a7%87%e0%a6%9